কোদালীছড়া খননকাজের উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য

মৌলভীবাজারে এক কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে কোদালিছড়া খালের পুনরায় খননকাজ শুরু হয়েছে। এতে সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কৃষি ও মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন এবং জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব হবে।

বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে দেশের ৬৪টি জেলা নদী, খাল, জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কোদালীছড়া খননকাজের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য নেছার আহমদ।

সংসদ সদস্য বলেন, এই কোদালীছড়া খননের ফলে তিনটি ইউনিয়নে প্রায় পাঁচ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন বাড়বে। মৎস্য উৎপাদন বাড়বে। জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তি পাবে এলাকাবাসী। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জনকল্যাণে সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করছে। স্বচ্ছতা ও দরপত্র মোতাবেক শতভাগ কাজ করতে ঠিকাদারকে আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে খালটি দখলমুক্ত করতে সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে এলাকাবাসীকে সহযোগিতা চাই।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ প্রকল্পে সাড়ে চার কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। ফলে গিয়াসনগর, নাজিরাবাদ ও মোস্তফাপুর ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমি চাষের আওতায় আসবে। যেসব এলাকায় বন্যার কারণে চাষ সম্ভব হতো না, সেই এলাকায়ও এখন ফসল ফলানো যাবে। এতে বাড়বে ধান, রবিশস্য ও প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন।

কাজী লুৎফুল বারী, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশের খাল-ছড়া দখলমুক্ত করে পুনঃখননকাজের বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় মৌলভীবাজারে কোদালীছড়া খাল খনন করা হচ্ছে। জেলার অন্যান্য নদী, খাল, জলাশয়ে কাজ চলছে। যেগুলো বাকি আছে, সেগুলোও খননের আওতায় আনা হবে।

মোস্তফাপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক মোস্তাকিম মিয়া জানান, কোদালিছড়া খননের দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের। খালটি ভরাট থাকার কারণে বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশন না হওয়ায় ফসলি জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এখন খালটি খননকাজ শুরু হয়েছে। সঠিক ও দুর্নীতিমুক্তভাবে খালটির খননকাজ শেষ হলে আশা করি আর ফসলি জমির ফসল নষ্ট হবে না।

সরেজমিন দেখা যায়, মৌলভীবাজার শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে কোদালিছড়া খাল। খালটি পৌর শহরের ভেতর দিয়ে, মোস্তফাপুর, গিয়াসনগর ও নাজিরাবাদ ইউনিয়ন হয়ে হাইল হাওরে শেষ হয়েছে। এই খাল দিয়ে উক্ত এলাকার পানিনিষ্কাশন হয়ে হাওরে পড়ে। কিন্তু পানিনিষ্কাশনের একমাত্র এ খালটি দীর্ঘদিন থেকে খনন না হওয়ায় অবৈধ দখলদূষণে ভরাট হয়ে রয়েছে। ফলে অল্প বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি ও ধানি-ফসলি জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন এই এলাকার স্থানীয় কৃষকেরা।

চলছে কোদালীছড়ার খননকাজ

পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী (পাউবো) প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে জানান, এক কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে কোদালীছড়া খালের সাড়ে চার কিলোমিটার পুনঃখনন করা হবে। সেই সঙ্গে দখলমুক্ত হবে কোদালীছড়া। ছড়ার পানিপ্রবাহ বাড়বে। উপকৃত হবেন এলাকাবাসী। আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে খালটির খননকাজ শেষ করার চেষ্টা রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ প্রকল্পে সাড়ে চার কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। ফলে গিয়াসনগর, নাজিরাবাদ ও মোস্তফাপুর ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমি চাষের আওতায় আসবে। যেসব এলাকায় বন্যার কারণে চাষ সম্ভব হতো না, সেই এলাকায়ও এখন ফসল ফলানো যাবে। এতে বাড়বে ধান, রবিশস্য ও প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন।

এনএ