নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবির বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণা অভিযোগে মামলা হয়েছে।

গতকাল সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সৈয়দপুর বিজ্ঞ আমলি আদালতে মেয়রের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন পৌর শহরের বাঙ্গালীপুর নিজপাড়া এালাকার বাসিন্দা গাউসুল আযম ফারুকী। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) মামলার তদন্তের নির্দেশ দেন। 

মামলার অভিযোগে জানা যায়, গত বছরের শেষের দিকে গাউসুল আযম ফারুকী তার নির্মাণাধীন ৬ তলা ভবনের লিফট স্থাপনের নকশা অনুমোদনের জন্য বিবাদী রাফিকা আকতার জাহান বেবির সহায়তা চান। এ সময় পৌর মেয়র পদে ছিলেন তার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতা। তাই ওই অনুমোদন আদায়ে সংশয় ছিল বাদীর। 

এ কারণে বেবির শরণাপন্ন হয়েছিলেন ফারুকী। বেবি এই সময় ফারুকীর কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন। বাদী গত বছরের ২১ ডিসেম্বর এবি ব্যাংক লিমিটেড সৈয়দপুর শাখায় নিজের হিসাব নম্বর (৪২১১-৫৭৮১৪০-০০০) থেকে চেকের মাধ্যমে এই টাকা প্রদান করেন। মামলার অপর বিবাদী হাসানুজ্জামান আজম ২৩ ডিসেম্বর চেকটি নগদায়নের ব্যবস্থা করেন। হাসানুজ্জামান আজম মেয়র বেবীর ব্যক্তিগত ম্যানেজার।

এদিকে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাফিকা আকতার জাহান বেবি পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। কিন্তু ততদিনেও বাদীর নকশা অনুমোদন পায়নি পৌরসভার দপ্তর থেকে। এরপর বাদী তার নকশা অনুমোদনের জন্য গত ২২ আগস্ট নতুন মেয়রের কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা করেন। এ সময় মামলার এক নম্বর বিবাদী (মেয়র) নকশা অনুমোদনেকর কাজের জন্য আবারও এক লাখ টাকা দিতে বলেন। একই সঙ্গে বিবাদী আগে এক লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। ফলে ফারুকী বাধ্য হয়ে মেয়রের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

সৈয়দপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুস সেলিম জুয়েল জানান, গাউসুল আযম ফারুকী গত এক মাস আগে লিফটের নকশা অনুমোদনের জন্য কাগজপত্রাদি দাখিল করেছেন, যা তদন্তনাধীন। এছাড়া তার ভবনের জমির জটিলতা বিষয়ে উচ্চ আদালতে মামলা ছিল।

বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুর আসাদুজ্জামান মিশন জানান, মামলার বাদী তার বাসায় লিফট স্থাপনের নকশা অনুমোদনের জন্য সাবেক মেয়রের সময়ে আবেদন করলেও না পেয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়। মহামান্য আদালত ৩০ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার নির্দোশ দিলেও তার সুরাহা হয়নি। ফলে সাবেক মেয়রের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ায় বর্তমান মেয়রকে ১ লাখ টাকা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি মেয়র হওয়ার পরেও অনুমোদন না দিয়ে ফের টাকা দাবি করেন এবং পূর্বে নেওয়া টাকা অস্বীকার করেন। তাই বাদী মেয়রের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগো মামলা দায়ের করেছে।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবি জানান, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে আমি মেয়র নির্বাচিত হই। অভিযোগকারী বিগত বছরে আমাকে নকশা অনুমোদনের জন্য টাকা দেয়ার বিষয়টি হাস্যকর। 

তিনি বলেন, মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি ও সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করাই তার মূল উদ্দেশ্য।

মাহমুদ আল হাসান রাফিন/এমএএস