মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের গাফিলতিতে নষ্ট হলো পাঁচ ভায়েল (২৫ ডোজ) করোনার টিকা। সোমবার (০৪ অক্টোবর) দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের টিকাকেন্দ্র থেকে নষ্ট হয়ে যাওয়া এই টিকাগুলো উদ্ধার করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে গণটিকার প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার ডোজ টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ২০০ ডোজ করে টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ৯ ওয়ার্ডের সুপারভাইজারের দায়িত্ব পান সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক (এইচআই) আব্দুল আউয়াল।

পৌরসভার আটটি ওয়ার্ডে ২০০ জন করে টিকা পেলেও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে টিকা পেয়েছেন ১৭৫ জন। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কার্যালয়ে টিকা কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়। বরাদ্দকৃত দুইশ ডোজ টিকার ২৫ ডোজ রয়ে যায়। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বরত সুপারভাইজার আব্দুল আউয়াল রয়ে যাওয়া বাকি ২৫ ডোজ টিকা ফিরিয়ে না আনায় সেগুলো সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। 

ছয়দিন পর গতকাল রোববার রাতে স্থানীয় কাউন্সিলর আতাউর রহমান চৌধুরী ছোহেল তার কার্যালয়ে ভ্যাকসিন ক্যারিয়ার বক্স পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তিনি বিষয়টি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তারকে অবগত করেন। সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য বিভাগ ভ্যাকসিন ক্যারিয়ার বক্সে নষ্ট হয়ে যাওয়া ৫ ভায়েল (২৫ ডোজ) করোনার টিকা ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

স্থানীয় কাউন্সিলর আতাউর রহমান চৌধুরী ছোহেল বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ৮ নম্বর ওয়ার্ডে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আমার কার্যালয়ে গণটিকার অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত  টিকা কার্যক্রম শেষে টিকার বাক্স ও টিকাদানের প্রয়োজনীয় তথ্যের কাগজ ফেলে রেখে যান। রোববার রাতে বিষয়টি আমি কর্তৃপক্ষকে অবগত করলে তারা সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যান।

এ ব্যাপারে টিকা কার্যক্রমের সুপারভাইজারের দায়িত্বে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, আমার দায়িত্ব শুধু টিকা কার্যক্রম সুষ্ঠু হচ্ছে কিনা সেটা দেখার। বিকেলে খবর পেয়েছি ওই ওয়ার্ডে ১৭৫ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে টিকা বাকি রয়েছে কিনা সেটা জানতাম না। রোববার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার বলেন, ভুলবশত এমনটি হয়ে গেছে। ইচ্ছে করেতো কেউ রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করতে চায় না।

মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদ বলেন, বিষয়টি অবশ্যই দায়িত্বহীনতা। গাফিলতির জন্য টিকা নষ্ট হলো। আমি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। 

ওমর ফারুক নাঈম/আরএআর