বৃদ্ধা টগরজান বেওয়া

‘পোলারে কইছিলাম আমারে একটা সোয়েটার কিনা দিস। কিন্তু পোলার কাম কাইজ তেমন ভালা না। তাই দিতে পারে নাই। তয় আইজকা সোয়েটার পাইয়া খুব ভালো লাকতাছে। অনেক উপকার হইলো। স্যাররা অনেক ভালা, আল্লাহ তাগো অনেক দিন বাঁচায় রাখুক। মাঘের কনকনে শীতে বড্ড কষ্ট হয়, তয় আর কষ্ট করতে অইবো না।’ 

কথাগুলো বলছিলেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের হেলাচিয়া মাজেদা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে 
শীতের পোশাক নিতে আসা বৃদ্ধা টগরজান বেওয়া। 

শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক হাজার অসহায় বয়স্কদের মাঝে শীতের পোশাক বিতরণ করে সামাজিক  সংগঠন হেল্পিং মাইন্ড।  এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস। 

বৃদ্ধা টগরজান বেওয়ার হাতে সোয়েটার তুলে দিচ্ছেন অতিথিরা

বৃদ্ধা টগরজান বেওয়া নালী ইউনিয়নের উভাজানি গ্রামের মৃত কেরু মোল্লার স্ত্রী। বয়স ৯০ পেরিয়েছে। বয়সের ভারে চলাচল করাই দায়। এমন শরীরে হেলাচিয়া মাজেদা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি সোয়েটার নিতে এসেছেন টগরজান বেওয়া। এক সন্তান নিয়ে তার সংসার। ছেলে স্থানীয় একটি দোকানে দর্জির কাজ করেন। মা-ছেলের সংসারে নেই  সচ্ছলতা। তার মতো বৃদ্ধ বয়সেও জেসমিন বেগম, লক্ষ্মী, আম্বিয়া খাতুনরাও এসেছেন শীতের পোশাক নিতে।  

আলীম নামে এক বৃদ্ধ বলেন, বাড়িতে একখান ছেঁড়া লেপ আছে, ওইডা জোড়াতালি দিয়া কোনো মতে রাতে গায়ে দিয়া ঘুমাই। একটা ভালো শীতের পোশাক কেনার মতো সামর্থ নাই। ওগো সোয়েটার পাইয়া আমি অনেক খুশি। দোয়া করি আল্লাহ ওদের ভালো রাখুক।

হেল্পিং মাইন্ড সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা  মির্জা শাশসুল আলমের সভাপতিত্ব সোয়েটার বিতরণ অনুষ্ঠানে ঘিওর উপজেলা পরিষদোর চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান, সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের প্রভাষক জাফর ইকবাল, নালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মধু, হেলাচিয়া মাজেদা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. মাসুদুল ইসলাম, সংগঠনের জেলা সভাপতি সাজিদুল ইসলাম কাজল, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ হোসেন খান তৌফিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরএআর