নার্সারি ব্যবসায় সুজনের সফলতা
নিজের বাড়িতে ছোট্ট পরিসরে শুরু করেন নার্সারি। লাভজনক হওয়ায় পরিসর আরও বড় করেন। গাছের চারার গুণগত মান ভালো হওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে অনেকে তার নার্সারিতে আসছেন চারা সংগ্রহ করতে। তবে সরকারি সহায়তা পেলে নার্সারি আরও সম্প্রসারণ করবেন বলে জানান নার্সারি ব্যবসায়ী সুজন সরকার।
এই নার্সারিতে রয়েছে ফুল, ফল, ঔষধিসহ সৌন্দর্যবর্ধক ১৩৫ প্রজাতির নানা প্রকার গাছ ও চারা। ফুলের মধ্যে রয়েছে গোলাপ, গাঁদা, গাজরা, রায়বেলী, জিনিয়া, কচমচ, দোপাটি, সূর্যমুখী ইত্যাদি। ফলের চারার মধ্যে আম, জাম, কাঁঠাল, কামরাঙ্গা, বেল, জামরুল, আপেল, কমলা ইত্যাদি রয়েছে। ঔষধি গাছের মধ্যে ঘৃতকুমারী, তুরুক চান্ডাল, বাই চান্ডাল, পাথরকুচি, নিম, অর্জুন, শতমূলসহ বিভিন্ন মসলাজাতীয় গাছ ও চারা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
জামালপুর শহরের বগাবাইদ এলাকার আবদুল জলিল সরকারের ছোট ছেলে সুজন সরকার। ২৬ বছর আগে পড়ালেখা শেষ করে বেকার ছিলেন। হঠাৎ নার্সারি গড়ে তোলার ভাবনা আসে তার মাথায়। নিজ বাড়িতে ছোট্ট পরিসরে মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে নার্সারি গড়ে তোলেন সুজন। পরে লাভজনক হওয়ায় আরও বড় পরিসরে নার্সারি গড়ে তুলতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
সুজন সরকার জানান, তার বাবার জমি বিক্রি করে ৯ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ির অদূরে ১০৪ শতাংশ জমির ওপর বেশ বড় আকারে গড়ে তোলেন নার্সারি। সেই থেকে শুরু হয় তার নার্সারি ব্যবসা। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নানা প্রজাতির ফলদ, বনজ, ঔষধি, ফুলসহ সৌন্দর্যবধনমূলক গাছের চারা উৎপাদন শুরু করেন। দিন দিন পরিচিতি বাড়ে তার নার্সারি ব্যবসার। নার্সারিতে চারার গুণগত মান উন্নত ও দাম নাগালের মধ্যে হওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসছেন কিনতে।
বিজ্ঞাপন
নার্সারিতে চারা কিনতে আসা শিহাবুর রহমান সাদ জানান, তিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বিনা মূল্যে কিছু চারা বিতরণের জন্য ঔষধি ও ভেষজ গাছ নেওয়ার পরিকল্পনা আছে তার। গাছগুলো দেখার পর মনে হলো নার্সারির পরিবেশ অনেক সুন্দর, গাছগুলো অনেক যত্নসহকারে উৎপাদন করা হচ্ছে। এখান থেকে চারা নিলে আমি আশানুরূপ ফল পাব বলে আশা করি।
ছোট্ট থেকে শুরু করে ২৬ বছরে বেশ বড় পরিসরে রূপ নিয়েছে তার নার্সারি। সঙ্গে আমার বাবা আবদুল জলিল সরকার, বড় ভাই লিটন সরকার ও দুজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। এ নার্সারি থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়েই আমাদের সংসার চলে।
সুজন সরকার, নার্সারির মালিক
চারা কিনতে আসা আসিফ চৌধুরী হিমেল, শিপা, মোশারফ হোসেন সেলিম বলেন, নিজেদের বাগানে রোপণের জন্য প্রতিবছরই এই নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করি। সেই সঙ্গে গাছের পরিচর্যা সম্পর্কে নানা জ্ঞান তারা নার্সারির মালিকের কাছ থেকে জানতে পারেন।
নার্সারির মালিক সুজন সরকার জানান, ছোট্ট থেকে শুরু করে ২৬ বছরে বেশ বড় পরিসরে রূপ নিয়েছে তার নার্সারি। সঙ্গে আমার বাবা আবদুল জলিল সরকার, বড় ভাই লিটন সরকার ও দুজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। এ নার্সারি থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়েই আমাদের সংসার চলে। চারার গুণগত মান উন্নত আর দাম সুলভ হওয়ায় প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে এসে মানুষ আমার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে নিয়ে যান।
তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক সময় নার্সারির ক্ষতি হয়, তাই সরকার যদি সুদমুক্ত ঋণ বা আর্থিক সহায়তা প্রদান করে, তবে আরও বেশি লাভবান হতে পারবেন বলে জানান তিনি।
এনএ