দলীয় শৃঙ্খলা না থাকার অভিযোগ তুলে জাতীয় পার্টির (জাপা) বদরগঞ্জ উপজেলা কমিটি থেকে সভাপতি আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু ও সম্পাদক ওবায়দুল হকসহ ৭১ জন নেতাকর্মী দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে পার্টির রংপুর জেলা কমিটির কাছে ওই পদত্যাগপত্র জমা দেন তারা।

পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে আসাদুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পার্টিকে সুসংগঠিত করতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু সম্ভব হয়নি। দলের ভেতরে বাইরে কোথাও শৃঙ্খলা নেই। এ কারণে আমরা উপজেলা কমিটির ৭১ সদস্যই একযোগে জেলা কমিটির কাছে পদত্যাপত্র জমা দিয়েছি।

বদরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মতবিরোধ চলছে। দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও সাবেক মহাসচিব এমপি মসিউর রহমান রাঙ্গা সবই জানে। কিন্তু কোনোভাবেই এটা নিরসন করা যায়নি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, দলীয় প্রধানেরা সমস্যার সমাধান না করে একে অপরকে দেখিয়ে দেন। চেয়ারম্যানের কাছে গেলে রাঙ্গাকে দেখিয়ে দেন, তিনি আবার চেয়ারম্যানের কাছে যেতে বলেন। আমরা সমস্যার সমাধানে কার কাছে যাব? এভাবে তো আর দল করা যায় না। এ কারণেই সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা কমিটির সবাই একসঙ্গে দল থেকে পদত্যাগ করেছি।

এদিকে গুঞ্জন উঠেছে শুধু বদরগঞ্জ উপজেলা জাপার কমিটি নয়, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও আগামীতে একযোগে দল থেকে পদত্যাগ করবেন। বিষয়টি তারা জেলা জাতীয় পার্টির নেতাদের অবগতও করেছেন।

৭১ জনের পদত্যাগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা কমিটির সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদত্যাগের বিষয়টি আমিও বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তবে আমার কাছে
এ সংক্রান্ত লিখিত কোনো কাগজপত্র জমা হয়নি। দলের কার্যক্রমে না থাকার ব্যাপারে বৃহস্পতিবার সকালে একটি বৈঠকে মৌখিকভাবে বদরগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি নিশ্চিত করেন। তবে তিনি যে দল থেকে পদত্যাগ করবেন, তা তখনো ওই বৈঠকে কাউকে জানাননি।

আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, বদরগঞ্জ উপজেলা কমিটি নিয়ে মোকাম্মেল হোসেন চৌধুরী ও আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু গ্রুপের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। আমরা সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছিলাম। এ জন্য বৃহস্পতিবার সকালে দুই গ্রুপকে নিয়ে পার্টির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগরের সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার উপস্থিতিতে একটি সমঝোতা বৈঠকও হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে দলীয় কার্যক্রম থেকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন আসাদুজ্জামান চৌধুরী। এর পরই হয়তো তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/রংপুর