শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, করোনা অতিমারীর কারণে কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখা গেছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাল্যবিয়ে বেশি হয়েছে। সেই জায়গায় আমরা চেষ্টা করছি বাল্যবিয়ে হয়ে যাওয়া মেয়েদের আবার ক্লাসে ফিরিয়ে আনতে। তারা অনেকেই স্থানান্তরিত হয়ে গেছে। অতিমারীর কারণে এক শহর থেকে আরেক শহরে বা শহর থেকে গ্রামে চলে গেছে। স্থানান্তরিত হলেও তারা যেখানেই আছে সেখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে তারা ক্লাসে অংশগ্রহণ করে এজন্য আমরা চেষ্টা করছি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে অধিভুক্ত কলেজসমূহে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রাম (ভার্চুয়ালি) উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

এসময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. ফয়জুল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, এ মুহূর্তে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাসের সংখ্যা বাড়াতে পারছি না। নতুন বছর শুরু হলে এবং তখন সংক্রমণ আরো কমে গেলে আমরা আশা করছি ক্লাসের সংখ্যা বাড়াতে পারবো। এখন যে অবস্থা আছে, তাতে সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর ক্ষেত্রে অভিভাবকরা যে পুরোপুরি স্বস্তিতে আছে, তা নয়। এ কারণে স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার কোথাও কোথাও কম আছে। আস্তে আস্তে যখন সব ক্লাস শুরু হবে তখন আবার তাদের উপস্থিতি বাড়বে, এটা নিশ্চিত। করোনাকালে কিছু শিক্ষার্থী হয়তো ঝরে গেছে। করোনা অতিমারীতে কতটা আসলে ঝরে গেছে এবং কি কারণে ঝরে গেছে সেটা আমাদের নিরূপন করতে হবে। সেটা নিয়ে আমরা এখনই কাজ করছি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আরও কিছুদিন গেলে আমরা বুঝতে পারব। সত্যিকার অর্থে কতজন ঝরে পড়েছে। আর কতজন করোনা অতিমারীর কারণে কিংবা ঋতু পরিবর্তনজনিত অসুস্থতার কারণে হয়তো ক্লাসে উপস্থিতির হার কম। আর কিছুদিন গেলে আমরা বুঝতে পারব সত্যিকার কোনো কারণে কতজন ক্লাসে আসছে না কিংবা কতজন আসলে ঝরে গেছে। তখন প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষে স্প্যাসিফিক ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে। আমরা এ বিষয়টি দেখছি। 

অনার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ সিদ্ধান্ত শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করে না। তাদের এমপিওভুক্তির বিষয়টি অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। 

এছাড়া একইদিন বিকেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলরুমে কেক কাটা এবং আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক ও উপাচার্য অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অংশ নেন। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গানে অংশ নেন বিশিষ্ট কণ্ঠ শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এবং ঢাকার সরকারি সঙ্গীত কলেজ সুরের ধারা কলেজ অব মিউজিকের শিল্পীরা।

শিহাব খান/এমএএস