নোয়াখালীতে নববধূকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার দয়ারামদি গ্রামে নববধূ নাজমা আক্তার ওরফে নাজুকে (২০) হত্যার দায়ে স্বামী মনির হোসেন বাবুকে (২৩) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহম্মেদ এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি মনির আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
রায় ঘোষণা শেষে দণ্ডিত আসামি মনির হোসেন বাবুকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মনির কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের দয়ারামদি গ্রামের মৃত আলী আহম্মদের ছেলে।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১ মে কবিরহাট উপজেলার দয়ারামদি গ্রামে বাবুর শ্বশুর বাড়ি থেকে নববধূ নামজা আক্তার ওরফে নাজুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩০ এপ্রিল রাতে আসামি তার স্ত্রীকে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত ভাবে শ্বাসরোধে হত্যার পর পালিয়ে যায়। ওই দিন রাতে সে এলাকার স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে সেখান থেকে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে নিহতের স্বামীকে আসামি করে কবিরহাট থানায় নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। এজাহারে বলা হয় তার বোনকে যৌতুকের দাবিতে হত্যা করা হয়েছে।
এ বছরের ২ আগস্ট মামলাটি তদন্ত করে আসামি বাবুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কবিরহাট থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আলম পাটোয়ারী। অভিযোগ পত্রে বলা হয় যৌতুকের দাবিতে নয় এক নারীর সঙ্গে সম্পর্কের কারণে আসামি বাবু তার স্ত্রীকে হত্যা করে।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, বিয়ের আগে থেকে বাবুর সাথে একই এলাকার মরিয়ম আক্তার পপি নামে এক নারীর প্রেম ছিল। এ পরকিয়া প্রেমের জের ধরেই মনির তার স্ত্রীকে হত্যা করে।
মামলার সরকারপক্ষের আইনজীবী নোয়াখালী দায়রা জজ আদালতের পিপি গুলজার আহমেদ জুয়েল ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৩ বছর বিচারের সময় আদালত নয়জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এরপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণা করেন আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমেদ। রায়ে স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার দায়ে স্বামী মনির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন জুয়েল।
হাসিব আল আমিন/আরআই