ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে আটক স্বামীকে ছাড়াতে থানায় দুই স্ত্রী
মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আটক বাসচালক খোকন মিয়াকে (২৮) ছাড়াতে সন্তানসহ সাটুরিয়া থানায় হাজির হয়েছেন দুই স্ত্রী। স্বামীর এমন কাজে লজ্জিতও তারা। তবে আটক স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে থানা পুলিশের কাছে আকুতি জানান তারা।
শনিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানা চত্ত্বরে আসেন তারা।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, খোকন মিয়ার প্রথম স্ত্রীর বাড়ি গাজিপুরের কালিয়াকৈর এলাকার দেওয়াইর বাজার এলাকায়। ২০১৪ সালে বিয়ে হয় তাদের। এরপর তাদের ঘরে আসে দুই সন্তান। প্রথম সন্তান মেয়ের বয়স ৮ বছর এবং ২য় সন্তান ছেলের বয়স ২ বছর। আর দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়ি খোকন মিয়ার নিজ এলাকায়। প্রথম স্ত্রীর বিষয় গোপন রেখে ২য় বিয়ে করে খোকন। পরে জানাজানি হলে সংসারে বিচ্ছেদ হয় তাদের। ২০১৪ সালের শেষ দিকে বিয়ে হয় তাদের। এই ঘরেও রয়েছে এক কন্যা সন্তান। যার বয়স মাত্র ৮ মাস।
থানা চত্ত্বরে আলাপকালে খোকনের প্রথম স্ত্রী জানান, স্বামী আটকের ঘটনা জানতে পেরে তিনি থানায় এসেছেন। অভাব অনটনে কোনোমতে দিন কাটে তাদের। স্বামী তেমন কাজও করে না। একদিন কাজ করলে দুই দিন বসে খায়। তার ওপর এ দুর্ঘটনা। এখন সন্তান নিয়ে না খেয়ে মরা ছাড়া আমাগো গতি নেই। তাই স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় অফিসারদের হাত-পা ধরে আকুতি করেছিলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
খোকনের দ্বিতীয় স্ত্রী জানান, স্বামী যে আগে আরেকটি বিয়ে করেছেন এ বিষয়টি তার বিয়ের সময় জানতেন না। প্রথম স্ত্রীর বিষয়টি জানার পরেও স্বামীকে নিয়ে বেঁচে থাকা স্বপ্ন বুনেন তিনি। সংসারে অভারের তারণায় নিজে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। আলাদা বাসায় থাকলেও মাঝেমধ্যেই তার বাসায় আসতেন স্বামী। তার ঘরেও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এখন কীভাবে দিনাতিপার করবেন সেটি নিয়ে শঙ্কা আছেন বলে জানান তিনি।
পুলিশে তদবিরের বিষয়ে খোকনের দুই স্ত্রী বলেন, আমাগো স্বামী একটা ভুল করে ফেলেছে। স্বামীর পক্ষ থেকে সবার কাছে ক্ষমা চাই। তবে এ বিষয়ে কিছুই করার নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে থানা পুলিশ।
সাটুরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, চলন্ত বাসে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে বাসচালক খোকনকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে ওই কলেজছাত্রী। আটক খোকনের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সোহেল হোসেন/এমএএস