সড়কে সংস্কারকাজ করায় এ দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়

চার লেনে উন্নীত হবে সড়ক। চলছে মূল সড়কের সংস্কার। বগুড়ার বনানী রাস্তায় সংস্কারের নামে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। ফলে যানবাহনের ধীরগতির সঙ্গে প্রায় ছয় ঘণ্টার যানজট। এতে যাত্রীদের ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত সময়। পথচারীদেরও পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে র‍্যাবিশ তুলে রাখা হয়েছে পাশে, এতে রাস্তার আয়তন কমে যানবাহন পারাপারেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

সরেজমিন বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দেখা যায়, শহরের ফুলতলা থেকে শাজাহানপুর উপজেলার ফটকি সেতু এলাকা অব্দি প্রায় চার কিলোমিটার সড়ক। এই সড়কে সংস্কারকাজ শুরু হওয়ায় সকাল থেকেই লেগে থাকে যানজট।

এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট আরও তীব্র হয়। আবার বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ায় যানজট কমতে শুরু করে। তবে দিনের বেলায় যানজট নিরসনে হিমশিম খাচ্ছেন ট্রাফিক সদস্যরা। দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৮ ঘণ্টা যানজটের শিকার হচ্ছেন এই পথে চলাচলকারীরা।

ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বগুড়ার এই চার কিলোমিটার সড়ক যানজট কয়েক দিন ধরেই দেখছেন বনানী এলাকার টং ঘরের চা বিক্রেতা শিপন যাদব৷ তিনি জানান, কয়েক দিন হলো রাস্তায় যানজট থাকায় তেমন চা খাওয়ার মানুষ কম। যানজট না থাকলে বেচা ভালো হয়। অন্যদিকে পথচারীরা শহরে আসার পথে প্রায় ৫০০ মিটার হেঁটে এসে গাড়ি উঠে আসতে হচ্ছে শহরে তাদের দৈনন্দিন কাজ সারতে।

এদিকে সচেতন মহল সড়ক জনপদের কাজের গাফিলতি ও সুষ্ঠু তত্ত্বাবধান না থাকায় এমনটা ঘটছে বলে ধারণা করছেন। আর এ কারণে ওই চার কিলোমিটার এলাকায় যানজট লেগেই আছে।

বগুড়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, সাসেক প্রকল্পের আওতায় বগুড়ায় সড়ক প্রশস্তকরণকাজ চলছে। এর মাঝে সওজ বিভাগ তাদের নিয়মিত সংস্কারকাজের অংশ হিসেবে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে ওভার লে এর জন্য দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্রের সময়সীমা অনুযায়ী কাজটি শেষ হওয়ার কথা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ১৫ দিন আগে কাজের সময় শেষ হয়েছে কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সময়সীমা পার হওয়ার পর কাজ শুরু করেছে। দেরিতে কাজ শুরু হওয়ায় তড়িঘড়ি কাজ করায় বাড়ছে যানজট।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা কনস্ট্রাকশন কাজটি করছে। কাজের সময়সীমা প্রায় ১৫ দিন আগে শেষ হয়েছে। কিন্তু তারা এখানো কাজ শেষ করতে পারেনি। বনানী এলাকায় প্রায় ৩৫০ মিটার সড়কে ওভার লের কাজ হবে। ৫০ মিলিমিটার পুরু করে ওভার লে দেওয়া হবে।

মো. মাহমুদুল, উপসহকারী প্রকৌশলী, সওজ বগুড়া বিভাগ

এ অবস্থায় বাস ট্রাকের চালক ও যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলন, পরিকল্পনা ছাড়া কাজ চলছে। যার ফলে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। সড়কের অবস্থা বেহাল, সেখানে সংস্কারের নামে ভোগান্তি বাড়ছে।

নওগাঁ থেকে ঢাকাগামী কার্গো ভ্যানের চালক করিম হোসেন জানান, সকাল ৯টায় গাড়ি যানজটে আটকা। দুপুর সাড়ে ১২টা বাজে তিন কিলোমিটার এগিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।

এদিকে বগুড়া ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলাম জানান, রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে। তাই চাইলেও আমরা যানজট কমাতে পারছি না। যানজট নিরসনে কাজ করছি। যত দ্রুত রাস্তা সংস্কার হবে, তত তাড়াতাড়ি সড়ক যানজটমুক্ত হবে।

সওজ বগুড়া বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মাহমুদুল জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা কনস্ট্রাকশন কাজটি করছে। কাজের সময়সীমা প্রায় ১৫ দিন আগে শেষ হয়েছে। কিন্তু তারা এখানো কাজ শেষ করতে পারেনি। বনানী এলাকায় প্রায় ৩৫০ মিটার সড়কে ওভার লের কাজ হবে। ৫০ মিলিমিটার পুরু করে ওভার লে দেওয়া হবে। রাস্তার র‍্যাবিশ তুলে রাস্তার পাশেই রাখার বিষয়ে তিনি জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত এগুলো অপসারণ করতে বলা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে তা শেষ করা হবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি প্রকৌশলী ফেরদৌস জানান, কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আমরা কাজ করছি। মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি মেয়াদ বাড়বে।

সাখাওয়াত হোসেন জনি/এনএ