চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা আসন ও এক ওয়ার্ড সদস্যকে নির্বাচিত করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনে পরাজিত হলে ওই দুই প্রার্থীকে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছেন জেহালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান মাস্টার। 

টাকা ফেরতের বিষয়টি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরদিন ঘটলেও শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) এলাকায় জানাজানি হয়। এতে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। 

তবে আব্দুল হান্নান মাস্টার দাবি করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। আমি নোংরা রাজনীতির শিকার। নির্বাচনে বিজয়ের জন্য নয়, স্বেচ্ছায় ওই দুই প্রার্থী ক্লাব বাবদ ও কর্মীদের জন্য টাকা দিয়েছিল। আমি টাকা নিতে না চাইলেও জোর করে দিয়েছে। পরে তাদের টাকা আমি ফেরত দিয়েছি।  ​

জেহালা ইউনিয়নের (বর্তমান) ৬ নং ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুল মজিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালাসহ একযোগে ১৩ ইউনিয়নের তফসিল ঘোষণার পর আমি ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী ছিলাম। গ্রামের সবােইকে ম্যানেজ করে জিতিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন জেহালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান। বিনিময়ে আমার নিকট থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা নেন। গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর আমি পরাজিত হই। রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন টাকা ফেরত দেন হান্নান মাস্টার।

অপরদিকে, জেহালা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের সানজিদা খাতুন সংরক্ষিত ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ড এর প্রার্থী ছিলেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, হান্নান মাস্টার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ভোট চাইতে হবে না। সবাইকে ম্যানেজ করে বিপুল ভোটে বিজয়ী করা হবে। আপনার বিজয় সুনিশ্চিত। এ কথা বলে আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করেন। পরে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হলে আমার টাকা ফেরত দেন আব্দুল হান্নান।

এ বিষয়ে জেহালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান মাস্টার বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। সমাজের চোখে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এসব কুৎসা রটনা করে আসছে এক শ্রেণির অসাধু লোকজন। 

দুই প্রার্থী এই প্রতিবেদকের নিকট টাকার নেওয়ার পর ফেরতের বিষয়টি স্বীকার করেছেন জানালে তিনি বলেন, আব্দুল মজিদের নিকট থেকে নির্বাচনে বিজয়ী করার জন্য টাকা নেইনি। একটা ক্লাব আছে। ক্লাবের উন্নয়নের জন্যেই তিনি ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। পরে আমি টাকা ফেরত দিয়েছি। অপর মহিলা প্রার্থী সানজিদা খাতুনও স্বেচ্ছায় এলাকার ছেলেদের জন্য দিয়েছিলেন। আমি নিতে চাইনি। 

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খুস্তার জামিল বলেন, নির্বাচনের পর অনেকে অনেক কথা বলে। বিষয়টি সঠিক কিনা দেখতে হবে। আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্তের পর ঘটনার সত্যতা পেলে সংগঠন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ নভেম্বর আলমডাঙ্গা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

আফজালুল হক/আরআই