গ্রেপ্তার মহসিন হায়দার ও তার সহযোগী আলাউদ্দিন

গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মহসিন হায়দার ও তার সহযোগী আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

অনলাইনভিত্তিক ‌‘মাই ন্যাশনাল আইটি’ কোম্পানির নামে গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তারা। গত প্রায় ছয় মাস ধরে মুরাদনগর উপজেলা সদরে চলছিল ‘মাই ন্যাশনাল আইটি’ কোম্পানির প্রতারণা। এই সময়ের মধ্যে চক্রের দুই সদস্য মুরাদনগর উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মহসিন হায়দার ও আলউদ্দিন হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ১০ কোটি টাকা।

মহসিন হায়দার (৪০) উপজেলা সদরের উত্তর পাড়ার শানু মোল্লার ছেলে ও আলাউদ্দিন (৩৫) দেবিদ্বার উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ছয় মাস আগে ‘মাই ন্যাশনাল আইটি পরবর্তীতে অ্যাক্টিভ বাজার ২৪’ নামে মুরাদনগর উপজেলা সদরের ফায়ার সার্ভিসের পেছনে হুমায়ুন ভিলার তিনতলায় অফিস কক্ষ ভাড়া নেওয়া হয়।

উপজেলার নেয়ামতপুর গ্রামের আবদুল হকের ছেলে আবু বক্কর বলেন, মহসিন হায়দার মাই ন্যাশনাল আইটি কোম্পানির একটি অ্যাকাউন্ট আবু বক্কর কিং নামে খুলে দেন। পরে অনলাইন অ্যাকাউন্টে ডলার দিয়ে আমার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেন। প্রথম মাসে আমাকে শেয়ারের লভাংশ দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা। পরের মাসে মাত্র ৬০০ দিনে টাকা দ্বিগুণ হওয়ার লোভ দেখিয়ে ১৫ লাখ টাকা নেন তিনি।

আবু বক্করের মতো উপজেলার নবীপুর গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে সাগর মিয়া ও একই গ্রামের সামসুল হকের ছেলে কিবরিয়া, রহিমপুর গ্রামের মতিন সরকারের ছেলে সোহাগ মিয়া, নোয়াগাঁও গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে মাহবুব সরকার, নেয়ামতপুর গ্রামের মনিরুল হকের ছেলে মোবাশ্বির ভূঁইয়া, ভূবনঘর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে বেলাল হোসেন ও আবু হানিফ, গকুলনগর গ্রামের আলী আকবরের ছেলে জুনায়েদ, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার পুমকারা গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে আল আমিনের কাছ থেকে পর্যাক্রমে ৬৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকাসহ প্রায় ৩০০ সদস্যের কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় শ্রমিক লীগ নেতা ও তার সহযোগী।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান বলেন, ৬০০ দিনে দ্বিগুণ টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ‘মাই ন্যাশনাল আইটি ও অ্যাক্টিভ বাজার’ প্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছিল। তাদের কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। কয়েকজন প্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় দেড় মাস চেষ্টার পর শনিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হবে।

ইসতিয়াক আহমেদ/এএম