বরিশাল সদর ইউএনও’র বাসায় হামলার মামলা
সাক্ষী না থাকায় মেয়রসহ ২৮ আসামির অব্যাহতি চাইল পুলিশ
ফাইল ছবি
সাক্ষীর অভাবে বরিশাল সদর উপজেলার সাবেক ইউএনও ও দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ। তবে দাখিল করা প্রতিবেদন এখনো আদালত গ্রহণ করেননি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলার ধার্য তারিখ থাকায় সেদিন আদালত শুনানি শেষে প্রতিবেদন গ্রহণ করা বা না করার ওপর আদেশ দেবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন। তিনি বলেন, যথেষ্ট সাক্ষী না থাকায় মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ না করলে পুনরায় তদন্ত হবে।
বিজ্ঞাপন
দুই পাতার ওই প্রতিবেদনে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ ২৮ অভিযুক্তকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন জানানো হয়। বরিশালের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ডিসেম্বর মাসে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় বলে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।
তিনি জানান, মামলার তদন্তের ভার ছিল কোতোয়ালি মডেল থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) আনোয়ার হোসেনের ওপর। তার বদলি হয়ে গেলে ১৯ নভেম্বর থেকে তিনি তদন্ত শুরু করেন। দায়িত্ব গ্রহণের ১৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের পক্ষের ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের কথা-কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ইউএনওর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।
পরে সেখানে উপস্থিত আনসার সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইউএনওর বাসায় হামলার চেষ্টা চালায়। এ সময় আনসার সদস্যরা গুলি ছুড়লে স্বপনসহ চারজন আহত হন।
এ নিয়ে পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ইউএনও মুনিবুর রহমান বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ ২৮ জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তৎকালীন ইউএনও মুনিবুর রহমান, কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এই দুই কর্মকর্তা পরবর্তীতে বদলি হয়ে যান।
এই ঘটনায় দেশব্যাপী আলোচনার সৃষ্টি হয়। যদিও সরকারে উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও মেয়রের মধ্যের বিরোধ সমঝোতা হয়।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএসআর