২০২১ সালে নেত্রকোনায় হত্যা, আত্মহত্যা, সড়ক দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ও পানিতে ডুবে মৃত্যুসহ ২৬১ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে অধিকাংশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সড়ক দুর্ঘটনায়।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র মতে, জেলার ১০টি উপজেলায় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ১১টি, ফেব্রুয়ারিতে ১২টি, মার্চে ২৮টি, এপ্রিলে ২১টি, মে মাসে ২৫টি, জুনে ২৩টি, জুলাইয়ে ২৭টি, আগস্টে ২৯টি, সেপ্টেম্বরে ৩০টি, অক্টোবরে ১৬টি, নভেম্বরে ২০টি এবং ডিসেম্বরে ১৯টিসহ মোট ২৬১টি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

তবে স্থানীয় সচেতনরা বলছেন, জেলায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসেবের চেয়ে আরো অনেক বেশি হবে। কারণ, জেলার পল্লী এলাকায় সাধারণ সড়ক দুর্ঘটনাসহ পানিতে ডুবে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কেউ মারা গেলে পুলিশি হয়রানি এবং মরদেহ ময়নাতদন্তে কাটাছেঁড়ার ভয়ে অনেকেই প্রশাসনকে না জানিয়ে অথবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি সাপেক্ষে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেন। এজন্য এসব মৃত্যুর হিসাব সরকারি হিসেবে নথিভুক্ত হয় না।

জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হার বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে অনেকটা উৎকণ্ঠা কাজ করছে। 

এ নিয়ে নিরাপদ সড়ক চাই নেত্রকোনা জেলা শাখার সদস্য আলপনা বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে সবার আগে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিবহন মালিক সমিতি ও জেলা মোটরযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের উদ্যোগে সব ধরনের যানবাহন চালককে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করার পাশাপাশি রাস্তায় কীভাবে গাড়ি চালাতে হয় সেই সব নিয়ম কানুন সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করতে হবে। 

তিনি বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক, অদক্ষ এবং মাদকাসক্ত অবস্থায় কেউ যেন গাড়ি না চালায় এবং ট্রাফিক আইন যাতে সবাই মেনে চলে তার জন্য ট্রাফিক বিভাগকে আরো সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে সবাইকে।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোবারক হোসেন বলেন, আমরা বাস ও ট্রাক চালকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ চালক-হেলপার ও পথচারীদেরকে স্ব স্ব স্থান থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
 
এ বিষয়ে কথা হলে নেত্রকোনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকবর আলী মুন্সী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিরাপদ আইন বাস্তবায়নে আমরা পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে সড়ক দুঘটনা রোধ ও ট্রাফিক আইন মেনে চলতে চালক, হেলপার এবং পথচারীদের মাঝে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। 

জেলায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটার পরপরই পুলিশ বিভাগ দ্রুত মামলা রুজু করছে এবং অভিযুক্ত চালকদের গ্রেফতার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে বলেও জানান এসপি।

 জিয়াউর রহমান/এমএএস