গাজীপুরের শ্রীপুরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে তাকে কাওরাইদ বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামি বিপ্লব (৪৫) কাওরাইদ গ্রামের মৃত নারায়ণ পাগলার ছেলে। সে এজাহার নামীয় মামলার তিন নম্বর আসামি।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম সারোয়ার বলেন, সন্ধ্যায় কাওরাইদ বাজার এলাকা থেকে মামলার তিন নম্বর আসামি বিপ্লবকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।

নয়নের বড় ভাই মানিক জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার কাওরাইদ কেএন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা খাইরুলের ছেলে অনুভবের (১৪) সঙ্গে নয়নের অনুসারীদের ঝগড়া হয়। পরে তার অনুসারীরা ঝগড়ায় বিষয়টি তাকে জানায়। নয়ন উভয় পক্ষকে ডেকে অনুভবকে একটা থাপ্পড় দিয়ে মীমাংসা করে দেয়। থাপ্পড় দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে যুবলীগ নেতা খাইরুল মীর নয়নকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসে ডেকে পাঠান। সেখানে আগে থেকেই খাইরুল মীরের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নয়নকে আটকে রাখার খবর পেয়ে তিনি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এসে নয়নকে না পেয়ে খুঁজতে থাকেন। কিছু সময় পর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পেছনে পুকুর থেকে নয়নের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, নয়ন মাদকবিরোধী বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা করত। চার মাস আগে নয়নের সঙ্গে খাইরুলের অনুসারী মাদক ব্যবসায়ী বাচ্চুর মারামারির ঘটনা ঘটে। নানা বিষয়ে নয়নের সঙ্গে বিরোধ চলছিল খাইরুল অনুসারীদের। হত্যা করতে বিভিন্ন সময় পরিকল্পনা করেছিল বলে নয়ন জানিয়েছিল। ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছিল নয়ন। 

অন্যদিকে খাইরুল মীরও বলয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে অন্য একজনকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছিল। নয়ন তাদের প্রার্থীর তুলনায় বেশ জনপ্রিয় ছিল, তবে ওই প্রার্থীর নাম জানাতে পারেননি তিনি। এ ছাড়া বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খাইরুল মীরের সঙ্গে নয়নের বিরোধ ছিল। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার তারা নয়নকে হত্যার মধ্য দিয়ে তাদের পূর্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।

অভিযুক্ত খাইরুল মীর ঘটনার পরপরই গা ঢাকা দিয়েছে। তার বাড়িতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম রবিন বলেন, নয়ন ছাত্রলীগের ত্যাগী একজন নেতা ছিল। পরিশ্রমী ও নিবেদিত প্রাণ ছিল ছাত্রলীগের জন্য। তার অকাল মৃত্যুতে ছাত্রলীগ গভীরভাবে শোকাহত। তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের কঠিন শাস্তির দাবি জানান।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, হত্যাকেণ্ডের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই তারা শেখ বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১০ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে ।

শিহাব খান/আইএসএইচ