আঁটিহীন কুল! কী নাম শুনে অবাক হচ্ছেন? এমনই এক জাতের কুল চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মাগুরার নাসির। তিনি ইউটিউবে থেকে সন্ধান পান এ জাতের কুলের। তারপর বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেন। সাড়াও পেয়েছেন বেশ। বর্তমানে তার আঁটিহীন কুল বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে প্রথমবারের মতো মাগুরা সদর উপজেলার রাউতড়া গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়েছে আঁটিহীন কুল। এ কুল দেখতে অনেকাংশে লাল, কিছুটা সবুজ। দেশি কুল থেকে খেতে বেশি মিষ্টি। সাধারণত দেশি কুলের ভেতরে বিচি থাকে কিন্তু এ কুলের ভেতরে কোনো আঁটি নেই।

নাসির এগ্রোফার্ম অ্যান্ড নার্সারির মালিক নাসির আহম্মেদ জানান, পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০১৬ সালে ফলের চাষ শুরু করেন তিনি। প্রথমে ৫ শতাংশ জমিতে চাষ করলেও বর্তমানে ১০০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করছেন। প্রতিদিনই বিভিন্ন মানুষ তার নার্সারি দেখতে আসছেন।

বিচিহীন কুল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতে চার একর জমিতে ২ হাজার আঁটিহীন কুলের চারা রোপণ করি। ৪-৫ মাসের মধ্যে ফুল আসে এবং প্রচুর পরিমাণে কুল ধরে। আমার বাগান থেকে কুল বিক্রি শুরু হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, কারওয়ানবাজার, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রামেও কুল যাচ্ছে।

গাছে শোভা পাচ্ছে বিচিহীন কুল

তিনি আরও বলেন, এ কুলের সব থেকে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এর ভেতরে আঁটি নেই। খেতে খুবই সুস্বাদু। অন্যান্য কুল থেকে বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি। আশা করছি, লাভবান হব।

নাসির আরও বলেন, দুই একর জমির কুল ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। বাকি দুই একর জমির কুল ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এ কুল চাষ করতে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। ফলনও খুব ভালো হয়েছে। আমার কাছ থেকে শতাধিক লোক চারা নিয়ে বাগান করেছেন। চারা বিক্রি করেও বেশ লাভ হচ্ছে।

ফল ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া জানান, নাসিরের কাছ থেকে কুল নিয়ে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। তার এ কুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমরাও লাভবান হচ্ছি।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রশান্ত কুমার প্রামানিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথমবারের মতো মাগুরায় আঁটিহীন কুলের চাষ হয়েছে। নাসির আহম্মেদকে কৃষি বিভাগ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। এ জাতের কুলের চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জালাল উদ্দিন হাককানী/এসপি