শিশু রাইসা

পাওনা টাকার জন্য তিন বছরের শিশু রাইসাকে অপহরণ করেন প্রতিবেশী সুমা খান। পরে শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে একপর্যায়ে মুখ চেপে ধরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন সুমা খান (২২)। 

গতকাল বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন কুমার কর্মকারের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সুমা খান।

রাইসার বাবা রাজু খান তিন-চার বছর আগে নিজের চাচা আরমান খানের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার করে ইরাকে যান। পরে সেই টাকা দেব-দিচ্ছি বলেও আর ফেরত দেননি রাজু। পাওনা টাকা আদায়ে গত সোমবার বিকেলে রাইসাকে অপহরণ করে নিজেদের ঘরে আটকে রাখেন। পরে রাইসাকে না পেয়ে পরিবারের লোকজন ব্যাপক খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তখন আরমানও অন্যদের সঙ্গে রাইসাকে খুঁজতে বের হন। রাইসা কান্নাকাটি শুরু করলে শিশুটির মুখ চেপে ধরেন এবং গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে শিশুটিকে হত্যা করে সুমা খান

সুমা খান সখিপুর উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের হতেয়া কেরানিপাড়ার আরমানের স্ত্রী। তবে সুমার স্বামী আদালতে শিশুটিকে হত্যার দায় অস্বীকার করেছেন। পরে আদালত ওই দম্পতিকে টাঙ্গাইল কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) ও সখিপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

এর আগে গত সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে জেলার সখিপুর উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের হতেয়া কেরানিপাড়ার প্রবাসী রাজু খানের মেয়ে রাইসার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে শিশুর মা লিপা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সখিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ প্রতিবেশী আরমান খান (৩৫) ও তার স্ত্রী সুমা খানকে (২২) মঙ্গলবার রাতেই গ্রেফতার দেখায়।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সুমা খান বলেন, রাইসার বাবা রাজু খান তিন-চার বছর আগে নিজের চাচা আরমান খানের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার করে ইরাকে যান। পরে সেই টাকা দেব-দিচ্ছি বলেও আর ফেরত দেননি রাজু। পাওনা টাকা আদায়ে গত সোমবার বিকেলে রাইসাকে অপহরণ করে নিজেদের ঘরে আটকে রাখেন। পরে রাইসাকে না পেয়ে পরিবারের লোকজন ব্যাপক খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তখন আরমানও অন্যদের সঙ্গে রাইসাকে খুঁজতে বের হন। রাইসা কান্নাকাটি শুরু করলে শিশুটির মুখ চেপে ধরেন এবং গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে শিশুটিকে হত্যা করে বস্তায় ভরে লাকড়ির মাচায় রেখে দেন তিনি। তবে বাড়ির চারপাশে মানুষের আনাগোনা থাকায় বস্তাটি কোথাও লুকাতে পারেননি তিনি।

এসআই সিরাজুল ইসলাম বলেন, আদালতে শিশু হত্যার দায় স্বীকার করে সুমা খান জবানবন্দি দেওয়ায় আদালত এই দম্পতিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এনএ