ইউএনওর প্রচেষ্টায় সেই রুমাকে আর চালাতে হবে না ভ্যান
বাবা-মায়ের আদরবঞ্চিত এ মানুষটির জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে রাস্তার মানুষের অবহেলার পাত্র হিসেবে। একটি ভ্যান চালিয়ে করতেন জীবিকা নির্বাহ। এভাবে কেটে গেছে ৩০ বছর।
২০২১ সালের ৯ মার্চ অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‘ভ্যান চালাই, ফুটপাতে ঘুমাই, মানুষে বলে নষ্টা’ শিরোনামে রুমা বেগমকে নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে বিষয়টি নজরে পড়ে পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদের।
বিজ্ঞাপন
তিনি প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে সরকারি ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তাতে হয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। পরে সেই ঘরের পাশেই কর্মসংস্থানের জন্য করে দেন একটি দোকান। যা নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন রুমা।
সোমবার (১৪ ফেব্রিুয়ারি) সকালে টোনা ইউনিয়নের লখাকাঠী গ্রামের রুমা বেগমের ঘরের পাশে তার কর্মসংস্থানের জন্য তৈরি দোকানের উদ্বোধন করেন পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ। সদর উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের অর্থায়নে এ দোকানঘর করে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি ফারজানা আক্তার, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান, টোনা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইমরান আলম খান হারুনসহ আরও অনেকে।
পিরোজপুর সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়নের লখাকাঠী গ্রামের বাসিন্দা রুমা বেগম। বছরখানেক আগেও ভ্যান চালিয়ে জীবন যাপন করেছেন। এবার সরকারি সহযোগিতায় তার হয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই ও কর্মসংস্থানের সুযোগ। তাই এখন আর তার রাস্তায় ভ্যান চালাতে হবে না রুমাকে।
দোকানঘর পেয়ে রুমা বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমারে একখান ঘর দিছে। এখন ইউএনও স্যার আমারে একটু দোকানের ব্যবস্থা করে দিছে। আমার এই দিয়ে এখন সংসারটা ভালো চলবে এবং আমি এখান থেকে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। আগে ভ্যানগাড়ি চালাইতাম। এখন আমার ছেলেকে লেখাপড়া করাব, তাকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলব।
টোনা ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইমরান আলম খান হারুন জানান, রুমা বেগম একসময় নারী হয়েও ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার এখন একটি থাকার জায়গা ও কর্মসংস্থান হয়েছে। তার যেকোনো সমস্যায় আমি ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে পাশে আছি।
পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ বলেন, রুমা বেগম শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি একজন বিধবা নারী। তার ঘর বা আশ্রয় বলতে কিছুই ছিল না। এ নিয়ে ঢাকা পোস্ট পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হলে আমার নজরে আসে।
পরে তাকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর প্রদান করি। ঘরের পাশে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে উপজেলা সমাজসেবা বিভাগের অর্থায়নে একটি দোকান দিয়ে মালপত্র কিনে দেওয়া হয়েছে। আশা করি তিনি এটি পরিচালনা করে সাবলম্বী হতে পারবেন।
মো. আবীর হাসান/এনএ