কয়রার ট্রিপল মার্ডারের সুষ্ঠু তদন্ত ও খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে নিহতের পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) খুলনা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত হাবিবুল্লাহর মেঝ ভাই মফিজুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে মফিজুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলার আসামি রশিদ গাজী হাবিউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে পিন, তক্ষক ও সাপের ব্যবসা করতেন, যা আমাদের জানা ছিল না। হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে বিষয়টি জানতে পেরেছি। তাকে সরে আসার অনুরোধ করা হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে রশিদ গাজী যাদের নাম বলেছে, তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত নয়। জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ আছে এমন ব্যক্তির সঙ্গে তিনি তাদের ফাঁসিয়েছে। মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করার পর খুলনা জেলা ডিবি পুলিশ তাদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ রাখছে না। তাদের কোনো কথায় কর্ণপাত করছে না। মূল আসামিরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। মামলাটির নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানাই।

নিহত হাবিবউল্লার বড় ভাবি সোনিয়া বেগম বলেন, অবৈধ পিন, তক্ষক ও সাপের ব্যবসা এবং টাকা পয়সা ভাগাভাগি নিয়ে এ হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হতে পা‌রে। হত্যাকাণ্ডের ৪ দিন আগে হাবিবুল্লাহর স্ত্রী তার মাকে ফোন করে বলেছিলেন, আমাদের ঘরে একটি পিন আছে যা অনেক মূল্যবান। এর আগে আসামি রশিদ গাজী ও তার খালু শ্বশুরকে সঙ্গে নিয়ে হাবিবুল্লাহ তার শাশুড়ির বাড়ি চট্রগামে বেড়াতে যান। সেখানে গিয়েও তার পিনের কথা বলাবলি করতে শুনেছেন বলে নিহতের শাশুড়ির কাছ থেকে জানতে পেরেছি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যা থেকে হাবিবুল্লাহর বাড়িতে দুইজন ব্যক্তি আসে। তারা কেউ পরিচিত নয়। ঘটনার দিন রাতে ওই ব্যক্তিদের আনাগোনা বেশ দেখা গিয়েছিল। ২৫ অক্টোবর রাতে হাবিবুল্লাহ ও তার স্ত্রীর হঠাৎ ৪৯ হাজার টাকার প্রয়োজন হয়। এলাকার বিভিন্ন লোক মারফত তিনি টাকাটা ধার নিয়েছিলেন।

টাকার বিষয়টি জানতে চাইলে ভিকটিম জানান, তোমাদের কিছু জানার প্রয়োজন নেই। তবে কিছুদিনের মধ্যে টাকার বিছানায় ঘুমাব বলে তিনি জানিয়েছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর ঘর থেকে একটি শার্ট ও এক জোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়, যা অনেক মূল্যবান। ওই এলাকার কেউ তা ব্যবহার করে না। হত্যাকান্ডের পূর্বে ধর্ষণের যে চাউর উঠেছে সেটিও সঠিক নয়। শুধু পরকীয়ার জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে তা সঠিক নয়। প্রকৃত ঘটনা সবার সামনে উন্মোচন করার জন্য তিনি মামলাটি পিবিআই বা সিআইডির কাছে হস্তান্তরের কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নিহতের মা কোহিনুর বেগম, মেঝ ভাই‌য়ের স্ত্রী সোনিয়া বেগম ও মেঝ ভাই মফিজুল ইসলামসহ এলাকার মানুষ।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর সকালে বামিয়া গ্রামের মাজেদ গাজীর বাড়ির পাশে একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় হাবিবুর রহমান, তার স্ত্রী বিউটি খাতুন ও তার কন্যা হাবিবা খাতুন টুনির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা কোহিনুর খামন বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।

মোহাম্মদ মিলন/আরআই