আসছে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক খাতের জন্য বিশেষ তহবিলসহ একগুচ্ছ সুবিধা চায় তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য- রফতানি বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর আগামী পাঁচ বছরের জন্য দশমিক ২৫ শতাংশ করা এবং করোনায় কমে যাওয়া রফতানি চাঙ্গা করতে প্রণোদনার হার চার শতাংশের পরিবর্তে পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি করা।

এ বিষয়ে বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনার কারণে পোশাক খাতে রফতানি কমেছে। এতে করে বিনিয়োগও কমেছে। সৃষ্টি হয়নি নতুন কর্মসংস্থান। উল্টো অনেক শ্রমিক তাদের চাকরি হারিয়েছেন।

তিনি বলেন, করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি রফতানিমুখী পোশাক কারখানাগুলো। এই কারখানাগুলোকে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনা, করোনা মোকাবিলা করে রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে আগামী বাজেটে বিশেষ প্রণোদনা দরকার।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পোশাক খাত। সরকারের উচিত বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া। আমরা সরকারে সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব।

তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, করোনার পরবর্তী সময়ে পোশাক খাতের জন্য প্রণোদনা জরুরি। কিন্তু ঢালাওভাবে প্রণোদনা দেওয়া যাবে না। কারণ ব্যবসায়ীরা সব সময় ফাঁকফোকর খুঁজেন, বেশি বেশি সুযোগ সুবিধা চান।

বিজিএমইএ’র দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য প্রদত্ত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ পরিশোধের সময়সীমা পুনরায় বৃদ্ধি করা। এক্ষেত্রে ২ বছরে ১৮টি কিস্তির পরিবর্তে ৩ বছরে ৩০টি কিস্তির মাধ্যমে এই ঋণ পরিশোধের সুযোগ চায় সংগঠনটি।

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে তৈরি পোশাক খাতের জন্য করপোরেট কর ১২ শতাংশ এবং গ্রীন কারখানার জন্য ১০ শতাংশ আগামী পাঁচ বছর রাখা। সরকারের দেওয়া নগদ সহায়তার ওপর আয়কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ থেকে শূন্য শতাংশ করা।

ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক কারখানার সৃষ্ট ব্যাংকের দায়-দেনাকে সুদ মুক্ত ব্লক অ্যাকাউন্টে ১০ বছরের জন্য স্থিতি অবস্থায় রাখার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় আর্থিক সংশ্লেষণ নিরূপণ করে, এ বাবদ বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ প্রদান। সেই সঙ্গে এসব কারখানাকে উৎপাদন-রফতানি কাজে ফিরিয়ে আনার জন্য ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ এবং এর মাধ্যমে বর্ধিত মেয়াদে পাঁচ শতাংশ হারে পুনরায় ঋণ দেওয়া।

করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোশাক-কারখানাগুলোকে উৎপাদনে ফিরে আনতে বিশেষ তহবিল প্রয়োজন। সেই সঙ্গে ১০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত রফতানিমুখী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে প্রণোদনার আওতায় আনার সুপারিশ করেছে বিজিএমইএ।

এছাড়াও নন-কটন খাতের বিনিয়োগ ও রফতানিকে উৎসাহিত করতে বিশেষ করে প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে এই খাতের রফতানির ওপর ১০ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনা চায় সংগঠনটি। করোনার কারণে রফতানির বাজার কমে গেছে। তাই বিজিএমইএ রফতানির বাজার ধরে রাখতে প্রণোদনার হার চার শতাংশের পরিবর্তে পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি করার দাবি জানায়।

এমআই/এমএইচএস