প্রায় সপ্তাহ খানেক পর বাজারে এসে কাঁচামরিচের দাম শুনে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না শামসুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, কাঁচা মরিচের যে এত দাম বেড়েছে এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। 

শামসুর রহমান আজ (শুক্রবার) সকালে বাজার করতে এসেছিলেন রাজধানীর বাড্ডার একটি বাজারে। তিনি বলছেন, সপ্তাহখানেক পর বাজার করতে এসে তিনি কাঁচামরিচের যে দাম শুনলেন তাতে তিনি অবাক। তার কাছে কাঁচামরিচের কেজি চাওয়া হয়েছে মান ভেদে ২০০ থেকে ২২০ টাকা।

শামসুর রহমান বলেন, কাঁচামরিচের যে এত দাম বেড়েছে এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। দাম শুনে আমি তো অবাক। এছাড়া মাছ, মাংস, সবজিসহ সব কিছুর দাম আজ বেশি। যে কারণে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ স্বাচ্ছন্দে কোনো কিছুই কিনতে পারছে না। একমাত্র আলু ছাড়া ৪০/ ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি বাজারে নেই।

কাঁচা মরিচের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে গুলশান সংলগ্ন গুদারাঘাট বাজারের দোকানি মনিরুল ইসলাম বলেন, আজ প্রায় এক সপ্তাহ যাবত কাঁচা মরিচের বেশি দাম যাচ্ছে। আজ বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে। আসলে বন্যা-বৃষ্টিসহ নানা কারণে কাঁচা মরিচের আমদানি কম থাকায় বাজারে দামের ওপর প্রভাব পড়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচসহ সবজি, মাছ, মাংস সবই তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে ভেন্ডি প্রতি কেজি ৫০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মূলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বাঁধা কপি মাঝারি সাইজের এক পিস ৬০ টাকা, ফুলকপি ছোট ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সিম ১২০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, গাজর (চায়না) ১৬০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, আলু ২০ টাকা, পিঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে রুই মাছ ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, কাতল মাছ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, কই ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, নদীর চিংড়ি ৬০০ টাকা, পাবদা ৩০০ টাকা, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ ১৭০০ টাকা কেজি, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১২০০ টাকা কেজি, ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারে দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, কক মুরগি ২৪০ টাকা, ডিম প্রতি ডজন ১১৫ টাকা, গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানী উত্তর বাড্ডা কাঁচা বাজারে বাজার করতে এসে সব কিছুর অতিরিক্ত দাম দেখে হতাশা আর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তৈরি পোশাক কর্মী জামাল আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। বাজারে এসে যদি দেখা যায় সবকিছুর দাম আমাদের নাগালের বাইরে তখন আর শখ করে কিছু কেনা হয় না। সবচেয়ে কম দামের যে পণ্য আছে তা কিনে কোনো মতো খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়।

তিনি আরও বলেন, আজ বাজারে এসে দেখি শুধু আলু আর পেঁপে ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সব সবজি ৫০ টাকার ওপরে। তাহলে আমরা কিভাবে এসব কিনবো। মাছ মাংসের কথা না হয় বাদই দিলাম। গরীব মানুষ যে ব্রয়লার মুরগির মাধ্যমে মাংসের শখ পূরণ করে সেই মুরগিও ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এএসএস/এনএফ