ডিসিসিআই সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মিশরের রাষ্ট্রদূত/ ছবি: সংগৃহীত

অবকাঠামো এবং নির্মাণ খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশরের রাষ্ট্রদূত হিথাম গোবাসি।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান। ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে সাক্ষাতের সময় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং মিশর দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মারিয়াম এম রাগেই এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের (ওআইআই) তথ্যমতে, সারাবিশ্বের অনলাইনভিত্তিক কর্মীর সংখ্যার হিসেবে পৃথিবীতে দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। বিশাল এ দক্ষ মানবসম্পদকে মিশরের ই-কমার্স খাতে কাজের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্য তিনি রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানান।

ডিসিসিআই সভাপতি জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ মিশরে ২৮.৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, বিপরীতে ৬১.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করছে, এর মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩১.৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের। তিনি বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি হারে সূতা, অর্গানিক কেমিকেল, নিটওয়্যার, ওভেন গার্মেন্টস, পাদুকা, প্লাস্টিকজাত পণ্য, ওষুধ, হোমটেক্সটাইল এবং সিরামিক জাতীয় পণ্য আমদানির জন্য মিশরের প্রতি প্রস্তাব করেন।

দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকল্পে সরকার ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপন করছে, যেখানে মিশরের উদ্যোক্তারা সম্ভাবনাময় খাতসমূহে বিনিয়োগ করতে পারে। এ জন্য ডিসিসিআইতে একটি ‘মিশর হেল্প ডেস্ক’ স্থাপনে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন সভাপতি।

এর মাধ্যমে দুদেশের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের সম্ভাব্য খাত ও প্রয়োজনীয় নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যাদি পাবেন। দুদেশের উদ্যোক্তাদের সম্পর্কোন্নয়নে ডিসিসিআই সভাপতি কায়রো চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং ঢাকা চেম্বারের মধ্যকার সম্পর্কোন্নয়ন এবং অনলাইনভিত্তিক কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কোর্স আয়োজনের প্রস্তাব করেন।

মিশরের রাষ্ট্রদূত হিথাম গোবাসি বলেন, দেশি-বিনিয়োগ আকর্ষণ ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য মানসম্মত অবকাঠমো খাতের কোনো বিকল্প নেই এবং বাংলাদেশের অবকাঠামোখাতের সার্বিক উন্নয়নে মিশরের উদ্যোক্তাদের বেশ আগ্রহ রয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

এছাড়া বাংলাদেশের নির্মাণ খাতকে বিনিয়োগের  জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, এ খাতের প্রয়োজনীয় বিকাশে মিশর ও বাংলাদেশের সরকারি এবং বেসরকারি খাত যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, করোনা মহামারিতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে মন্দাভাব দেখা যাচ্ছে, তা মোকাবিলায় মিশর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহী এবং এ লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ল্যাটিন আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে পণ্য রপ্তানিতে মিশর শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে এবং এ সুযোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে এ দেশের উদ্যোক্তাদের মিশরে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

এসআই/এফআর