জনতা ব্যাংকের সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক পুরস্কার পেল বেক্সিমকো

জনতা ব্যাংকের ২০২০ সালে মোট রপ্তানির ৬৬ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে লোকাল অফিসের মাধ্যমে। আর লোকাল অফিসের ৭৬ শতাংশ রপ্তানি সম্পন্ন হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের মাধ্যমে। এছাড়াও একক গ্রুপ হিসেবে লোকাল অফিস ও ব্যাংকের শীর্ষ রপ্তানিকারক হিসেবে অবদান রেখেছে বেক্সিমকো।

বৃহস্প‌তিবার (১৪ জানুয়া‌রি) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বেক্সিমকো গ্রুপকে সর্বোচ্চ রফতানি ট্রফি ও সেরা গ্রাহকের সম্মাননা জানিয়েছে জনতা ব্যাংক লিমিটেড।

ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের কারণে অন্যান্য কোম্পানিগুলো ঋণ পরিশোধ না করলেও কোনো কিস্তি বাকি রাখেনি বেক্সিমকো। গত বছরের (২০২০) ঋণের কিস্তি হিসেবে ৪২৬ কোটি টাকা প্রদান করেছে গ্রুপটি।

জনতা ব্যাংকের এমডি ও সিইও আবদুছ ছালাম আজাদ বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক এবং সিইও সৈয়দ নাভেদ হোসেনের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন। জনতা ব্যাংক লোকাল অফিসের অন্যতম গ্রাহক বেক্সিমকো লিমিটেড ২০২০ সালে ব্যাংকটির সর্বোচ্চ রপ্তানি ও সর্বাধিক মুনাফা প্রদানকারী গ্রাহক। তাই ব্যাংকের ৬৪৮তম পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেক্সিমকো লিমিটেডকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। 

অনুষ্ঠানে বেক্সিমকো গ্রুপের ফিন্যান্স ডিরেক্টর ওসমান কায়সার চৌধুরী, চিফ অপারেশন অফিসার অনিল কুমার মহেশ্বরি, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোস্তফা জামানুল বাহার, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এম এস খান শাকিল ও হেড অব ব্যাংকিং মাসুম মিয়া এবং জনতা ব্যাংকের ডিএমডি ইসমাইল হোসেন, জিকরুল হক, জসিম উদ্দিন, আব্দুল জব্বার, আমিরুল হাসানসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উধ্বতন নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বেক্সিমকোর প্রধান নির্বাহী সৈয়দ নাভিদ হোসেন বলেন, করোনাতে আমাদের অন্যান্য ব্যাবসা কমলেও পিপিই উৎপাদন, বিপনন ও রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুণ। গ্রুপের অন্যান্য ব্যবসা কমে অর্ধেকে পৌঁছে। তবে চিকিৎসা সামগ্রীর মাধ্যমে নতুন পরিকল্পনায় আগাচ্ছি। 

তিনি বলেন, ২০২১ সালে টিকে থাকা কঠিন হবে। এই কঠিন সময়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাজ করছে বেক্সিমকো।

জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ বলেন, জনতার সঙ্গে বেক্সিমকো গ্রুপের ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। এখন গ্রুপটি এই ব্যাংকের শীর্ষ রপ্তানিকারক। তাদের সহযোগী হতে পেরে আমরা গর্বিত। গ্রুপের ২৮টি কোম্পানিতে ৬৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাদের সম্মানিত করতে পেরেছি এটা আমাদের পাওনা। 

এমডি আরও জানান, করোনার মধ্যে কোনো গ্রাহক ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে ঋণমান অপরিবর্তিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যাকে ব্যাংকের ভাষায় বলা হয় ডেফারেল সুবিধা। অন্য কোম্পানিগুলো এই সুবিধা নিলেও বেক্সিমকো ডেফারেল সুবিধা নেয়নি। প্রতিটি কিস্তি সময়মতো পরিশোধ করেছে। ২০২০ সালে আগের বছরের তুলনায় ২০০ কোটি টাকার বেশি পরিচালন মুনাফা অর্জন করেছে জনতা ব্যাংক। যা এই গ্রুপের সহযোগিতার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। আমরা প্রকৃতভাবে জনতার ব্যাংকে পরিণত হওয়ার চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতেও করব। ২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ ব্যাংকে পরিণত হওয়ার আশা ব্যক্ত করেন আবদুছ ছালাম আজাদ।

বেক্সিমকো গ্রুপের অন্তর্ভূক্ত ১৩টি প্রতিষ্ঠান মাধ্যমে জনতা ব্যাংকে ব্যবসা পরিচালনা করছে। সদ্য বিদায়ী ২০২০ সালে জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে বেক্সিমকো গ্রুপের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেডের রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ২ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। গত বছর ব্যাংকটি বেক্সিমকো গ্রুপ থেকেই আয় করেছে প্রায় ৪৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে পুনর্গঠিত ও পুনঃতফসিল করা ঋণের কিস্তি বাবদ আয় হয়েছে ৪২৭ কোটি টাকা।

এসআই/ওএফ