২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে করপোরেট কর হার কমানো, বন্ডের সুদের ওপর কর প্রত্যাহার এবং করমুক্ত লভ্যাংশের আয় সীমা ২ লাখ টাকা করাসহ পাঁচটি দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (সিএসই)।

মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুরে এক ভিডিও বার্তায় এ দাবি জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম।

তিনি বলেন, পাঁচ দাবির প্রথমটি হলো- করপোরেট করহারের পুনর্বিন্যাস। এক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য বিদ্যমান কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা যেতে পারে। তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যকার করহারের পার্থক্য বাড়লে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত হবে যা পুঁজিবাজারকে সমৃদ্ধ করবে এবং স্বচ্ছ করপোরেট রিপোর্টিং এর মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়াতে সহায়তা করবে।

দ্বিতীয় দাবি হলো- নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য কর রেয়াতের সময়সীমা বাড়ানো। ন্যূনতম ২০ শতাংশ শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে হস্তান্তর করলে আয়কর রেয়াত লাভের বিদ্যমান সু্যোগ শর্তসাপেক্ষে তিন বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে, তালিকাভুক্তির বছর ১০ শতাংশ কর রেয়াত দিতে হবে। তবে প্রতিষ্ঠানটিকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে থাকতে হবে। ২য় ও ৩য় বছর ৫ শতাংশ কর রেয়াত দিতে হবে।

আসিফ ইব্রাহিম বলেন, কর রেয়াতের কারণে অতালিকাভূক্ত কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত হবে। এতে পুঁজিবাজারে গুণগত মানসম্পন্ন শেয়ারের যোগান বাড়বে যা বাজারে লেনদেন বাড়ানোসহ স্থিতিশীলতা আনতে প্রধান ভূমিকা পালন করবে। ফলে জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান আরও বাড়বে।

তৃতীয় দাবি হলো- স্মলক্যাপ বোর্ড (এসএমই) কোম্পানিগুলোর জন্য নতুন কর হার নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এসএমই কোম্পানিগুলোর জন্য তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে ৫ বছরের জন্যে ১০ শতাংশ হারে কর নির্ধারণ করা যেতে পারে।

সাধারণত স্বল্প মূলধনী কোম্পানিসমূহ প্রাইভেট লিমিটেড হিসেবে নিবন্ধিত হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কাঠামো দুর্বল হওয়াতে সরকারের তেমন কোনো রাজস্ব আদায় হয় না। পুঁজিবাজারের এসএমই বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী তালিকাভুক্ত হলে অধিক সংখ্যক কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হবে।

চতুর্থ দাবি হচ্ছে, ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা বাড়ানো। এক্ষেত্রে করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা যেতে পারে। আর পঞ্চমটি হলো- তালিকাভূক্ত-অতালিকাভূক্ত বন্ডের সুদের ওপর কর অব্যাহতি।

সিএসই চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে শুধুমাত্র জিরো কুপন বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয় ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাতিরেকে করমুক্ত। দেশের অর্থনীতির আকার এবং ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট তৈরি করা অতি জরুরি। এ পদক্ষেপ পুঁজি বাজারের পাশাপাশি আর্থিক খাতেও শৃঙ্খলা আনতে পারে। সে কারণে নতুনভাবে একটি বন্ড মার্কেট তৈরির লক্ষ্যে সব বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয় করমুক্ত করা প্রয়োজন এবং জিরো কুপন বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয়ের করমুক্ত সুবিধা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব করদাতাকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

এমআই/আরএইচ