ইউজিসির সঙ্গে চার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ভার্চ্যুয়াল সভা

নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বে দেশের প্রথম সারির চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ল। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মধ্যস্থতায় তিন দফা সভা করেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি বুয়েট, চুয়েট, রুয়েট ও কুয়েট। শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে এর আগে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় সম্মত হয়েছিল এই চার বিশ্ববিদ্যালয়।

সর্বশেষ বুধবার (২০ জানুয়ারি) ইউজিসির সঙ্গে চার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক ভার্চ্যুয়াল সভা হয়। সেই সভায় ভর্তি পরীক্ষায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দেবে এবং কোথায় অনুষ্ঠিত হবে এ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় আটকে যায় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা।

এর আগের সভায় বুয়েট জানায়, প্রতি বছর কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান বুয়েট থেকে হবে এবং পরীক্ষার কেন্দ্র শুধুমাত্র বুয়েটেই হবে। বুধবারের সভায় অন্য তিনটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যরা জানান, শুধু বুয়েটের একা নয়, অন্য তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীদারিত্ব থাকবে এবং প্রশ্নপত্র প্রণয়নে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটিতে তাদের রাখতে হবে। 

এছাড়াও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ইংরেজি বানানের আদ্যক্ষর দিয়ে পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান এবং ভর্তি পরীক্ষা চার বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এতেও আপত্তি জানায় বুয়েটের প্রতিনিধিরা। ফলে সিদ্ধান্তহীনতার মধ্য দিয়ে বুধবারের সভা শেষে হয়।

তবে বুয়েট এ দুটি বিষয় আগামী সপ্তাহে তাদের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তুলবে। সেখানে অনুমোদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে ইউজিসিকে জানায়।

সভায় বুয়েটের উপ-উপাচার্য প্রফেসর জব্বার বলেন, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে তারা এই পদ্ধতিতে যাচ্ছেন। বুয়েটের চলমান ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে কোনো ধরনের প্রশ্ন নেই। গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় কোনো ধরনের বিপর্যয় যাতে না ঘটে, সেদিকে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে ভর্তি পরীক্ষায় কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রতি বছর কোথায় পরীক্ষা হবে তা নিয়ে অন্য তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় যে দুটি প্রস্তাব দিয়েছে তা আমাদের একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদন প্রয়োজন। আগামী সপ্তাহে জরুরি সভা ডাকা হবে। সেখানে যে সিদ্ধান্ত আসবে তার প্রেক্ষিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক আলমগীর বলেন, শিগগিরই এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবে। ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ সবার জন্য মঙ্গলজনক। গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনি উদারভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম শেখ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল জব্বার খান হোসেন যুক্ত ছিলেন।

এছাড়া, সভায় ইউজিসির জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ জামিনুর রহমান এবং বুয়েটের তিনজন অধ্যাপক অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত এক সভায় চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও তাদের মনোনীত প্রতিনিধিরা জানান, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে সবাই নীতিগতভাবে সম্মত আছেন।

এনএম/এসআরএস