জ্যাকলিন ফার্নান্ডিজের পর এবার আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ালো অভিনেত্রী কৃতি বর্মা। ২৬৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ইডির নজরে এ অভিনেত্রী।

অভিনয়ের জগতে আসার আগে কৃতি বর্মা আয়কর বিভাগে চাকরি করতেন। রিয়ালিটি শো-এর পরিচিত মুখ কৃতি রোডিজ এক্সট্রিমের মাধ্যমে ২০১৮ সালে লাইমলাইটে আসেন, এরপর চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে গ্ল্যামার জগতেই কেরিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরে বিগ বস ১২-এ অংশ নেন কৃতি। বেশকিছু ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন তিনি। 

অভিযোগ এক ইনকাম-ট্যাক্স কর্মকর্তা ২৬৪ কোটি টাকা গায়েব করে দিয়েছেন নিজের সিনিয়র কর্মকর্তার লগইনের অধিকারের অপব্যবহার করে। এই আর্থিক কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত ভূষণ পাটিল, যার সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন কৃতি। বেআইনিভাবে গায়েব করা ওই ২৬৪ কোটি টাকার অধিকাংশই নাকি পাটিলের অ্যাকাউন্টে সরানো হয়েছে। যে টাকা দিয়ে বেশকিছু সম্পত্তি কেনা হয়েছে, যার মধ্যে বহু সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে কৃতি বর্মার নামে। 

এই মামলায় ইতোমধ্যেই বহুবার ইডির জেরার মুখে পড়েছেন কৃতি। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিনেত্রী। আইটি টিডিএস রিফ্যান্ড ব়্যাকেটের সঙ্গে যোগ উড়িয়ে কৃতি জানান, পাটিলের সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন একটি ডান্স শো-এর পারিশ্রমিক হিসাবে এক কোটি টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছিল। 

ইডির কর্মকর্তাদের কৃতি জানিয়েছেন, ২০২০ সালে পানভেলে এক ডান্স শো চলাকালীন মূল অভিযুক্ত ভূষণ পাটিলের সঙ্গে পরিচয় তার। এরপর মাস ছয়েক সম্পর্কে ছিলেন তারা, তবে অভিযুক্তর অপরাধমূলক গতিবিধির কথা জানতে পেরে তড়িঘড়ি সম্পর্ক ছিন্ন করেন তিনি। এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে তার যোগ নেই দাবি কৃতি বর্মার। 

পাটিলের সঙ্গে এই কেলেঙ্কারির মূল হোতা হলো তানাজি মণ্ডল। সিনিয়র ট্যাক্স অ্যাসিসটেন্ট হিসেবে কাজ করতেন তানাজি। সিনিয়র কর্মকর্তাদের বিশ্বাস অর্জন করে তাদের লগইনের যাবতীয় তথ্য কুক্ষিগত করেন, পরে টিডিএস রিফান্ডের ২৬৪ কোটি টাকা পাটিলের এক কোম্পানির অ্যাকাউন্টে বেআইনিভাবে ট্রান্সফার করেন। ২০১৯-এর নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১২ বারে এই বিরাট অঙ্কের টাকা সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে উড়িয়ে দেন তানাজি। পরে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রমোশন হয় তার, আইটি ইন্সপেক্টরের পদ পান তানাজি। তবে এই দুর্নীতি ফাঁস হতে বেশি সময় লাগেনি। যে ব্যাংকে পাটিলের অ্যাকাউন্ট ছিল, সেটির মাধ্যমে সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে এত কোটি টাকার ট্রান্সফার দেখে রেড ফ্ল্যাগ জারি করা হয়। পরে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে সিবিআই পাটিল, তানাজি-সহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নামে এফআইআর দায়ের করে। সেই এফআইআরে নাম ছিল না কৃতি বর্মার।

পরে সিবিআইয়ের এফআইআর মতো আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলা রুজু করে ইডি। মহারাষ্ট্র ও কর্নাটক থেকে ইতোমধ্যেই ৭০ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি, যে সম্পত্তির কিছু অংশ কেনা হয়েছে কৃতি বর্মার নামে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৬ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। সব মিলিয়ে ১৬৬ কোটি টাকা ইতোমধ্যেই উদ্ধার হয়েছে। তদন্তের সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

এমএ