ইয়াঙ্গুনে হাজার হাজার মানুষের অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ থেকে সু চির মুক্তি ও গণতান্ত্রিক সরকার ফেরানোর দাবি উঠেছে| ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় টানা ষষ্ঠ দিনের মতো দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করছেন হাজার হাজার মানুষ। অভ্যুত্থানকারী সামরিক জান্তা সরকারকে চীন সমর্থন দিচ্ছে অভিযোগ করে বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ করেছেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী।

ইয়াঙ্গুনের বিক্ষোভে একজনের হাতে ইংরেজি ও চীনা ভাষায় লেখা একটি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এতে লেখা হয়েছে, ‘মিয়ানমারকে সমর্থন করুন, স্বৈরশাসককে সমর্থন করবেন না।’ অপর এক বিক্ষোভকারী স্থানীয় একটি গণমাধ্যমকে বলেন, চীনের মন্ত্রীরা এমনভাবে কাজ করছেন যেন মনে হচ্ছে তারা এই সামরিক অভ্যুত্থান সমর্থন করেন।

তবে দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান এবং প্রতিবাদের বিষয়ে চীনা দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। 

বুধবার রাতে চীনা প্রযুক্তি কর্মীদের বহনকারী একটি বিমান মিয়ানমারে অবতরণ করেছে বলে অনলাইনে যে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে; তা নাকচ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয় চীনের দূতাবাস।

এতে বলা হয়, এটি ছিল আমদানি-রফতানির কাজে নিয়োজিত নিয়মিত পণ্যবাহী একটি ফ্লাইট। এই ফ্লাইটে সামুদ্রিক খাবার পরিবহন করা হয়েছে। যদিও বৃহস্পতিবার মিয়ানমারে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের ফেসবুক পেইজটি আর পাওয়া যাচ্ছে না।

চীন প্রতিবেশি মিয়ানমারে সরঞ্জাম এবং তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের পাঠাচ্ছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, এ বিষয়ে তিনি এখন পর্যন্ত কিছু শোনেননি। তিনি বলেন, মিয়ানমার সম্পর্কে চীনকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা তথ্য এবং গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

প্রতিবেশি মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে চীনকে ঐতিহ্যগতভাবেই সন্দেহের চোখে দেখা হয়। কারণ এই দেশটিতে চীনের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে। এছাড়া মিয়ানমারকে ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বের যেকোনও ধরনের সমালোচনার প্রায়ই বিরোধীতা করে বেইজিং।

চীনা এই কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে চীন। আমাদের প্রত্যাশা— দেশটির সবপক্ষ জাতীয় উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতার কথা মাথায় রাখবে।

পশ্চিমা বিশ্ব গত ১ ফেব্রুয়ারির মিয়ানমারে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের তীব্র নিন্দা করলেও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার গুরুত্ব অনুধাবন করে চীন সতর্কতা অবলম্বন করছে। চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত কিছু গণমাধ্যম মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনাকে মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল বলে মন্তব্য করেছে।

অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারির নিন্দা ও নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ অন্যান্য আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আহ্বান জানালেও তাতে সম্মতি জানায়নি চীন।

এসএস