আমরা কথা নয়, কাজ চাই: খামেনি
পরমাণু প্রকল্প নিয়ন্ত্রণে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ছয় স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্রের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি বা জ্যাকোপা পূর্ণমাত্রায় কার্যকর করতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর কথা নয়, সক্রিয় তৎপরতা দেখতে চায় তেহরান।
ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বুধবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিভিশনে এক বক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনকে উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা অতীতে অনেক সুন্দর কথা, শ্রুতিমধুর প্রতিশ্রুতি শুনেছি এবং পরে দেখেছি কীভাবে সেগুলো লঙ্ঘণ হয়েছে কিংবা প্রতিশ্রুতিবিরুদ্ধ কাজ হয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
‘কথা এবং প্রতিশ্রুতির আর কোনো মূল্য নেই। এখন আমরা শুধু তৎপরতা চাই। অপরপক্ষ তৎপরতা শুরু করলেই আমাদের তরফ থেকে কাজ শুরু হবে।’
২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেওয়ার পর থেকে সুতোয় ঝুলতে থাকা পরমাণু চুক্তি বা জ্যাকোপাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসা এবং তা কার্যকর করা বিষয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তেহরান চাইছে চুক্তি সক্রিয় ও কার্যকর করার প্রথম পদক্ষেপ আসুক যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে। দেশটির সরকারের বক্তব্য— ২০১৮ সালে ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই’ ইত্যাদি অজুহাত তুলে কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে ইরানের ওপর একগুচ্ছ নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যে কারণে এখনো ভুগতে হচ্ছে ইরানের সাধারণ জনগণকে। ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞাগুলোর কারণে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্য, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনতে সমস্যায় পড়েছে ইরান।
এসব কারণে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নিয়ে আবার জ্যাকোপাতে ফিরে আসা এখন সম্পূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব বলে মনে করছে তেহরান। গত দু’মাসে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ একাধিকবার মন্তব্য করেছেন, চুক্তিতে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ফিরে আসার আগ পর্যন্ত ইরান পরমাণু চুক্তিতে ফিরবে না।
অন্যদিকে তেহরানের এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, জ্যাকোপাতে ইরানের ওপর যে শর্তগুলো আরোপ করা হয়েছিল, যেমন—ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়ানো, মজুত করা ইউরোনিয়াম পরিশোধন করে গুণগত মান বাড়ানো ইত্যাদি কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসা এবং ফার্ডো শহরসহ দেশটির যেসব এলাকায় পরমাণু প্রকল্পের কাজ চলছে সেগুলো বন্ধ করার আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তিতে ফিরবে না।
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ