বিশ্বখ্যাত রাশিয়ান অস্ত্র প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কালাশনিকভ চলতি বছরই ভারতে কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কালাশনিকভকে সম্মতি ও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী দিমিত্রি তারাসভ।

চলতি বছর ভারতে ৬ লাখ ৭০ হাজার একে ২০৩ অ্যাসল্ট রাইফেল উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে দিমিত্রি তারাসকভ বলেন, ‘আমরা আশা করছি দু’দেশের যৌথ উদ্যোগ ও সহযোগিতায় চলতি বছর থেকেই আমরা উৎপাদনে যেতে পারব। আমার মনে হয় এর মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার এই যৌথ বাণিজ্যের উদ্যোগ একটি দৃষ্টান্তে পরিণত হবে।’

গত কয়েক দশক ধরে বিশ্বজুড়ে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে অটোমেটিক কালাশনিকভ ৪৭ বা একে ৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রথম এই আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার করেছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন।

১৯৪১ সালে মিখাইল কালাশনিকভ নামের এক রাশিয়ান সৈনিক এ আগ্নেয়াস্ত্রের নকশা করেছিলেন। যুদ্ধে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই নকশা করেছিলেন তিনি।

পরে তার নামেই আগ্নেয়াস্ত্র প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান করে ‍সোভিয়েত ইউনিয়ন। ২০১৩ সালে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিশ্বে ১০ কোটিরও বেশি একে ৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে কালাশনিকভের শীর্ষ নির্বাহী জানান, সম্প্রতি তাদের প্রতিষ্ঠান দু’টি আগ্নেয়াস্ত্রের নকশা অনুমোদন করেছে। একটি হচ্ছে অটোমেটিক কালাশনিকভ সিরিজের সর্বশেষ সংযোজন একে ২০৩ এবং উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন শটগান আলটিমা। চলতি বছর থেকেই এই দুই আগ্নেয়াস্ত্রের উৎপাদন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

একে ২০৩ অ্যাসল্ট রাইফেলটি একে ৪৭ রাইফেলেরই উন্নত সংস্করণ। অন্যদিকে উন্নত প্রযুক্তির আলটিমা শটগান খুব সহজেই ওয়াইফাই, ব্লুটুথ এবং স্মার্টফোনের সঙ্গে সংযোগস্থাপনে সক্ষম।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে একটি আগ্নেয়াস্ত্র কারখানা স্থাপণ করেছে কালাশনিকভ, যেখানে একে ২০৩ সিরিজের আগের সংস্করণ একে ১৩০ উৎপাদন করা হচ্ছে। ক্রিমিয়া যুদ্ধের ফলে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে না পারলেও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে উল্লেখযোগ্য হারে বিক্রি হচ্ছে এই আগ্নেয়াস্ত্র। লাতিন আমেরিকার ক্রেতাদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ভেনেজুয়েলা।

উন্নত প্রযুক্তির শটগান আলটিমা

উচ্চপ্রযুক্তি বা হাইটেক শটগান আলটিমা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বিশ্বে। দিমিত্রি তারাসভ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা নতুন প্রজন্মের গ্রাহকদের জন্যই এই শটগান প্রস্তুত করছি। বর্তমান প্রজন্ম অনেকটাই প্রযুক্তি নির্ভর। গতানুগতি আগ্নেয়াস্ত্রের চেয়ে হাইটেক আগ্নেয়াস্ত্র তাদের অধিক আকর্ষণ করবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

কালাশনিকভের শীর্ষ নির্বাহী বলেন, ‘আমরা খুব ভালো করেই জানি, বর্তমান বিশ্ব কোন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র চায়।’

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ