আমেরিকা ফিরে এসেছে: অ্যান্টনি ব্লিনকেন
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন
‘আমেরিকা ইজ ব্যাক’ বা আমেরিকা ফিরে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। একইসঙ্গে করোনাভাইরাস মহামারি সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু এবং ইরানের পরমাণু সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র ‘পুরোপুরি’ কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম হিসেবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) একথা বলেন তিনি। এসময় করোনা মহামারি মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী টিকাদান কর্মসূচির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোভ্যাক্স প্রকল্পে ৪০০ কোটি টাকা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মাধ্যমে এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বিশ্বের ১৯০টি দেশের মানুষের মধ্যে ২০০ কোটিরও বেশি ডোজ টিকা দেওয়া সম্ভব।
অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, ‘বিশ্বের সাইকে ভ্যাকসিন না দেওয়া পর্যন্ত কেউই পুরোপুরি নিরাপদ নয়। কারণ ভাইরাস থেকে থাকলে সেটা মানুষকে সংক্রমিত করবে এবং রূপান্তরিতও হবে। আর ভাইরাসের রূপান্তর অব্যাহত থাকলে সেটা বার বার ফিরে আসবে এবং মানুষ আক্রান্ত হবে।’
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৭০ লাখের বেশি মানুষকে করোনার টিকা দিয়েছে। তবে বিশ্বের অনেক দরিদ্র দেশ এখনও করোনার টিকাদান শুরুই করতে পারেনি।
সাক্ষাৎকারে করোনাভাইরাসের উৎসস্থল নিয়ে লুকোচুরি খেলায় চীনের সমালোচনাও করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে প্রতিটি দেশের স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। তথ্য জানানো প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের সব জায়গায় যাওয়ার অনুমতি থাকা উচিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই বিষয়গুলো চীনের ক্ষেত্রে আমরা দেখিনি।’
উল্লেখ্য, মহামারির উৎস অনুসন্ধানে চীনে যাওয়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বাধীন তদন্ত দলকে করোনাভাইরাসের শুরুর দিকের তথ্য-উপাত্ত দিতে অস্বীকার করে বেইজিং। যে কারণে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কীভাবে শুরু হয়েছিল তা বোঝার সম্ভাব্য প্রচেষ্টা জটিল হয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছিলেন জাতিসংঘের তদন্ত দলের অস্ট্রেলীয় সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডোমিনিক ডায়ার। সেসময় তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রাদুর্ভাব শুরুর প্রাথমিক পর্যায়ে চীনের উহান শহরে করোনা শনাক্ত হওয়া ১৭৪ জন এবং অন্যান্যদের অপরিমার্জিত তথ্য-উপাত্ত জাতিসংঘের তদন্ত দল চাইলেও কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র তাদের সারসংক্ষেপ সরবরাহ করে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শেষভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মারা যাওয়া ব্যক্তির উহানের একটি মাংস বাজারে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। ৬১ বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তি যখন মারা যান, তখনও এই রোগের নাম নির্দিষ্ট করা হয়নি। চীনের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘অপরিচিত ধরনের নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি।
করোনায় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্র প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, চীন থেকে গোটা বিশ্বে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে চীন। দেশটির দাবি, করোনাভাইরাসের উত্স নির্দিষ্ট কোনও একটি এলাকা নয়; একাধিক উত্স থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে।
সূত্র: বিবিসি
টিএম