বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৭ কোটি ৭১ লাখ ৫৭ হাজার ছাড়িয়েছে। সোমবার (২১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সবশেষ হিসাব থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের দেয়া হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, এ সময় পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় মোট প্রাণহানি হয়েছে ১৬ লাখ ৯৯ হাজার ১৩৬ জনের। তবে ৫ কোটি ৪০ লাখ ৭৭ হাজার ৩৯ জন মানুষ রোগটি থেকে সেরে উঠেছেন।

বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। সবশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮২ লাখ ৬৬ হাজার প্রায়। নতুন শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজারের বেশি। দেশটিতে এ পর্যন্ত মহামারি করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ৩ লাখ ২৪ হাজার ৮৫৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১ হাজার ৪০৩ জন।

করোনার প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়। প্রতিবেশী দেশটিতে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৫৬ হাজার ২৪৮ জন। নতুন ২৪ হাজার ৫৮৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৮৪৩ জন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ৩৩০।

সংক্রমণের দিক বিবেচনায় লাতিন আমেরিকার ব্রাজিল তৃতীয় অবস্থানে। দেশটিতে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা ৭২ লাখ ৩৮ হাজার ৬০০ জন। নতুন শনাক্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ৪৪৫। আক্রান্তদের মধ্যে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। গত একদিনে ব্রাজিলে ৪১৭ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

বাংলাদেশে কী অবস্থা 
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৭ হাজার ২৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে আর আক্রান্ত হয়েছেন মোট  ৫ লাখ ৭১৩ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৩৭ হাজার ৫২৭ জন। শেষ দিনে আরও ৩৮ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মারা যাওয়া ৩৮ জনের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ ও নারী ৮ জন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে আট জন, সিলেট বিভাগে তিনজন, রাজশাহী বিভাগে দু'জন রয়েছেন। এছাড়া বরিশাল ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে একজন করে তিনজন রয়েছেন। এদের মধ্যে সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। 

গত ডিসেম্বরের চীনে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনার প্রকোপে বিপর্যস্ত দেশগুলোর তালিকায় এর পর রয়েছে যথাক্রমে রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, ইতালি, স্পেন ও আর্জেন্টিনা।

মহামারি কোভিড-১৯ এর প্রকোপ বিবেচনায় বিশ্বের শীর্ষ বিপর্যস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২৭। দেশে এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৭১৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ৭ হাজার ২৮০ জন ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি। শিগগিরই আরও কিছু দেশে শুরু হবে। মূলত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

চীনে করোনায় প্রথম মৃত্যু হয় চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি। তবে তার ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি। এর পর ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে বিভিন্ন দেশে প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ে।

সংক্রমণ বিস্তারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে গত ৩০ জানুয়ারি নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

এর পর ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম কোনো করোনা রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। আর ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এই করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগের নামকরণ করে ‘কোভিড-১৯’।

এমএইচএস