ভারতে করোনার নতুন ধরন, নিরাপদ নন টিকাগ্রহীতারাও
ভারতে করোনাভাইরাসের মোট ২৪০টি নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলো ধরন প্রচলিত ভাইরাসের তুলনায় অতিমাত্রায় সংক্রামক ও বিপজ্জনক। এই ধরনগুলোর সামনে করোনা টিকা নেওয়া ব্যক্তিরাও নিরাপদ নন।
ভারতের চিকিৎসা বিষয়ক সর্বোচ্চ গবেষণাকেন্দ্র অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স বা এআইআইএমসির প্রধান ডা. রণদীপ গুলেরিয়া ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে শনিবার এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
করোনার সংক্রমণ মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে হার্ড ইমিউনিটির কথা বলা হচ্ছে, ভারতে এই ভাইরাসের ২৪০টি নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ায় বর্তমানে বা নিকট ভবিষ্যতে দেশটিতে তা গড়ে ওঠা সম্ভব নয় উল্লেখ করে এনডিটিভিকে গুলেরিয়া বলেন, ‘একটি দেশের অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষের দেহে করোনা প্রতিরোধী শক্তির উপস্থিতি থাকলে তাকে আমার হার্ড ইমিউনিটি বলতে পারি।’
‘কিন্তু সম্প্রতি এ ভাইরাসের যে নতুন ধরনগুলো শনাক্ত হয়েছে, তার অনেকগুলোই টিকার ফলে মানবদেহে সৃষ্ট করোনা প্রতিরোধী প্রোটিনকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। এ কারণে যারা টিকা নিয়েছেন- তারা যে নিরাপদে আছেন, এই মুহূর্তে এমনটা বলার উপায় নেই।’
বিজ্ঞাপন
করোনার এই নতুন ধরনগুলোর সামনে টিকার কার্যকারিতা কতখানি- প্রশ্নের উত্তরে গুলেরিয়া বলেন, ‘টিকা অবশ্যই কার্যকর, কিন্তু নতুন এই ধরনগুলোর সামনে কার্যকারিতার পরিমাণ হ্রাস পাবে। অর্থাৎ টিকা নেওয়া ব্যক্তিরাও এই ধরনগুলোর সংস্পর্ষে এলে আক্রান্ত হবেন; কিন্তু যেহেতু তারা ইতোমধ্যে টিকা নিয়েছেন, তাই সেক্ষেত্রে মৃদু আকারে করোনার লক্ষণ দেখা যাবে তাদের দেহে।’
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে ভারত। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাদের টিকা দেওয়া হবে, সেই তালিকায় সবার আগে রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখসারির করোনাযোদ্ধারা। তালিকায় তাদের পর রয়েছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা।
প্রথম পর্যায়ে ৩ কোটি স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখসারির করোনাযোদ্ধাদের টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে ভারত সরকারের। এর পরের প্রায় ২৭ কোটি পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তিদের টিকা দেওয়া হবে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ১ কোটি ৭ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হয়ে গেছে।
কিন্তু এদিকে সম্প্রতি ভারতের কয়েকটি রাজ্যে সংক্রমণ পরিস্থিতিরও অবনতি ঘটছে। মহারাষ্ট্র রাজ্যের কোভিড টাস্কফোর্সের সদস্য ডা. শশাঙ্ক জোশি এনডিটিভিকে জানিয়েছেন—মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও পাঞ্জাব রাজ্যে বাড়ছে করোনায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কি করা যেতে পারে—প্রশ্নের উত্তরে ডা. রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, ‘নতুন ধরনগুলোর বৈশিষ্ট শনাক্ত করে সেই অনুযায়ী টিকাগুলোর উন্নয়ন করতে হবে; আর যতদিন তা না হয় ততদিন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অর্থাৎ টেস্টিং, কন্টাক্ট ট্রেসিং, আইসোলেশন ইত্যাদি আবারও ব্যাপকমাত্রায় চালু করতে হবে।’
সূত্র: এনডিটিভি
এসএমডব্লিউ