ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ

যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া একতরফা নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের অর্থনীতির এক লাখ কোটি মার্কিন ডলার সমপরিমাণের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। যে কারণে তেহরান এখন ক্ষতিপূরণ চায় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

২০১৫ সালে ইরান ও পাঁচ বিশ্ব পরাশক্তির মধ্যে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিতে কে আগে ফিরবে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক মতবিরোধ চলছে। তেহরান বলছে, ইরান পরমাণু চুক্তিতে ফিরতে চায়; তবে এর আগে দেশটির ওপর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত সকল নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। অন্যদিকে, ওয়াশিংটন বলছে- ইরানকেই এই চুক্তিতে ফেরার বিষয়ে আগে ঘোষণা দিতে হবে।

এরপর পরমাণু চুক্তি পুনর্বহালের জন্য ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে যুক্তরাষ্ট্র কাজ শুরু করার পর রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) ক্ষতিপূরণের কথা বললেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করতে আলোচনায় বসতে চায় তেহরান।

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম প্রেসটিভি’কে দেওয়া ঘণ্টাব্যাপী সাক্ষাৎকারে জাভেদ জারিফ বলেন, ‘ পারমাণবিক চুক্তির অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনায় আমরা ক্ষতিপূরণের বিষয়টি উত্থাপন করবো।’

এই ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিভিন্নভাবে হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এটা হতে পারে সরাসরি আর্থিক ক্ষতিপূরণ অথবা তারা (ইরানে) বিনিয়োগের কাঠামো বেছে নিতে পারে অথবা ট্রাম্প যা করেছিলেন; সেটা যেন পুনরায় না হয়- সে বিষয়েও পরাশক্তিরা একটি কাঠামো দাঁড় করাতে পারে।’

ইরান বরাবরই দাবি করে থাকে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পাঁচ বিশ্ব পরাশক্তির মধ্যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই’ অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার ব্যাপারে ইরানও উদাসীন হয়ে পড়ে।

এরপর তেহরানের ওপর আবারও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি সমঝোতায় টিকে থাকলেও চুক্তি মেনে চলার ক্ষেত্রে এসব দেশের ঢিলেঢালা মনোভাব  ছিল লক্ষ্য করার মতো।

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর তেহরানের বিরুদ্ধে অতীতের বিভিন্ন সময়ে আরোপিত ৮০০টি পুরাতন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে ট্রাম্প প্রশাসন। একইসঙ্গে তেহরানের বিরুদ্ধে নতুন করে আরও ৮০০টি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ট্রাম্প। পরমাণু চুক্তিতে ফেরার আগে এর সবগুলোই প্রত্যাহার করতে হবে।

সূত্র: আলজাজিরা

টিএম