নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ভেনেজুয়েলার ১৯ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, আইনপ্রণেতা ও সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

এক বিবৃতিতে ইইউর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বলা হয়, গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর পক্ষে কারচুপির অভিযোগ রয়েছে এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মাদুরোর অনুসারীরা প্রায় সব আসনেই জয় পান। বিরোধী দলগুলোর বর্জন সত্ত্বেও ভেনেজুয়েলার নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সমাজবাদী প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো আরও অবস্থান সুদৃঢ় করেন। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নির্বাচনে আরও ক্ষমতা নিজের আয়ত্তে নেন তিনি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুয়াইদোর সঙ্গে মাদুরোর ক্ষমতার দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ ৬০টির বেশি দেশ এখনও হুয়ান গুয়াইদোকে ভেনেজুয়েলার বৈধ নেতা হিসেবে বিবেচনা করে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন মাদুরো।

এর মধ্যেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নেতারা ভেনেজুয়েলার ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা জানান। আগেও ভেনেজুয়েলার বেশ কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় মোট ৫৫ জনের নাম উঠল।

দুই বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইইউ মাদুরোর ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসছে। তাদের যুক্তি, ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচন ছিল লজ্জাজনক।

ইইউর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে, তারা বিরোধী দলের নির্বাচনী অধিকার ও গণতান্ত্রিক কার্যক্রম ক্ষুণ্ন করার দায়ে অভিযুক্ত। এ ছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মৌলিক স্বাধীনতার পথেও তারা বাধার সৃষ্টি করেছে।

ইইউর নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ আরিয়াজা এক টুইটবার্তায় বলেছেন, সম্মানিত নাগরিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা যুক্তি দিয়ে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ভেনেজুয়েলার সরকার পরিবর্তনে বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ায় ইইউ হতাশ হয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও টুইটবার্তায় মন্তব্য করেন আরিয়াজা।  

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, তার ছেলে আর্নেস্টে মাদুরো ও ভেনেজুয়েলার আইনসভায় তার দলের অনুসারী আট সদস্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। একই মাসে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পিডিভিএসের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশটি।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ