সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল-সৌদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ সপ্তাহের মাথায় স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো বাদশাহ সালমানের সঙ্গে কথা বললেন তিনি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অপ্রকাশিত একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন পড়ার পর সৌদি বাদশাহকে ফোন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ফোনালাপে মানবাধিকার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি।

এদিকে ফোনালাপের বিষয়ে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার নিশ্চিত এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে বলে বাদশাহ সালমানকে নিশ্চিত করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

ফোনালাপ নিয়ে যা বলছে হোয়াইট হাউস
সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল-সৌদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের টেলিফোনে কথা বলা নিয়ে হোয়াইট হাউস যে বিবৃতি দিয়েছে, সেটাতে কোথাও সাংবাদিক জামাল খাশোগির নাম উল্লেখ নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি লৌজান আল-হাথলুলসহ সৌদি-আমেরিকান মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার নিশ্চিত এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে বলেও বাদশাহ সালমানকে নিশ্চিত করেছেন তিনি।’

ফোনালাপে উভয় নেতা যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং সৌদির বিরুদ্ধে ইরানপন্থী বিভিন্ন গ্রুপের হুমকি নিয়ে আলোচনা করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী এবং যথাসম্ভব স্বচ্ছতা আনতে কাজ করা হচ্ছে বলে সৌদি বাদশাহকে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এছাড়া যৌথ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন উভয় নেতা।’

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে দেশটির এজেন্টদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি। নিজের বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ৫৯ বছর বয়সী এই সাংবাদিক ছিলেন সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক।

সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি 

হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর এ বিষয়ে গোপনে তদন্ত করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক হওয়ার কারণে ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাশোগিকে হত্যার বিষয়ে অনুমোদন, এমনকি সম্ভবত আদেশও দিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

গোপন ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি খুব শিগগিরই প্রকাশিত হতে পারে এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সৌদি যুবরাজকে দায়ী করা হতে পারে। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন অবশ্য এই প্রতিবেদন প্রকাশে অপারগতা জানিয়েছিল। বরং ট্রাম্পের লক্ষ্য ছিল সৌদির সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করা। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের এই মিত্র দেশটির ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন জো বাইডন।

সূত্র: বিবিসি

টিএম