আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্ট আরমেন সারকিসিয়ান

আর্মেনিয়ার সেনাপ্রধানকে বরখাস্তের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের প্রস্তাব অনুমোদন না করে ফিরিয়ে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরমেন সারকিসিয়ান। আজারবাইজানের সঙ্গে সম্প্রতি নাগোরনো-কারাবাখ যুদ্ধে শোচনীয় পরাজয়ের পর সৃষ্ট জাতীয় রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সেনাপ্রধানকে গত বৃহস্পতিবার বরখাস্ত করেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে প্রতিবেশি আজারবাইজানের সঙ্গে ছয় সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধে পর্যদুস্ত হওয়ার পর গত নভেম্বরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় শান্তিচুক্তিতে রাজি হয় আর্মেনিয়া। এরপর থেকেই এই চুক্তিকে দেশটির জন্য পরাজয় হিসেবে উল্লেখ করে আন্দোলন করে আসছে বিরোধীরা। এতে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়।

চলমান জনঅসন্তোষের মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ান দেশটির সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ওনিক গাসপারিয়ানকে বরখাস্ত করেন। এরপর সামরিক বাহিনীকে শুধু তার নির্দেশ মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি। তবে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সেই আদেশে স্বাক্ষর ও অনুমোদন করতে অস্বীকার করেন প্রেসিডেন্ট আরমেন সারকিসিয়ান।

গত বৃহস্পতিবার ফেসবুকের মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, ‘এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ক্ষমতা জনগণের হাতে রাখা। কারণ যা ঘটছে সেসব ঘটনাকে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা বলেই বিবেচনা করছি আমি।

তবে শনিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ানের এই সিদ্ধান্ত ও যুক্তিকে সমর্থন করেননি দেশটির প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সাংবিধানিক ক্ষমতা কাঠামোর মাধ্যমেই প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট আপত্তিসহকারে ওই প্রস্তাবটি ফেরত পাঠিয়েছেন।’

একইসঙ্গে বিভিন্ন পদ থেকে কেবল ব্যক্তি পরিবর্তন করে চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধান করা সম্ভব নয় বলেও বিবৃতিতে বলা হয়। তবে এর প্রতিক্রিয়ায়, সেনাপ্রধানকে পদচ্যুত করতে আবারও প্রস্তাব পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন নিকোল পাশিনিয়ান।

রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধ শেষ হলেও নভেম্বরের ওই যুদ্ধে আর্মেনিয়ার পরাজয়ের পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল দেশটিতে। তবে তীব্র শীত ও তুষারপাতের কারণে বিক্ষোভের গতি কমে। এখন শীত কিছুটা কমায় আবারও প্রধানমন্ত্রীর পাশিনিয়ানের পদত্যাগের দাবি জোরালো হচ্ছে। দেশটির মানুষ এখনো বিক্ষোভ করছেন।

বৃহস্পতিবারও তীব্র শীত ও তুষারপাত উপেক্ষা করে ছাতা মাথায় দিয়ে রাজধানী ইয়েরেভানে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার সরকারবিরোধী মানুষ। এ সময় তাদের অনেককে ‘নিকোল, তুমি দেশদ্রোহী’, ‘নিকোল, পদত্যাগ করো’ বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সূত্র: আলজাজিরা

টিএম