মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট ফাইজার এবং জার্মানির জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগ শুরু করেছে সিঙ্গাপুর। সৌদি আরবের পর এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বুধবার সিঙ্গাপুরে স্বাস্থ্যকর্মীদের শরীরে প্রয়োগের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় বলছে, কর্মসূচির আওতায় প্রথম টিকা নিয়েছেন দেশটির সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজের নার্স সারাহ লিম (৪৬) এবং চিকিৎসক কালিসভার মারিমুথু (৪৩)। আগামী ২০ জানুয়ারি টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেবেন তারা।

মারিমুথু বলেন, ‘অতীতে দেখা গেছে, বিভিন্ন মহামারিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে টিকা। তাই আমি আশাবাদী, চলমান কোভিড মহামারি মোকাবিলাতেও এই টিকাটির ভূমিকা অতীতের টিকাগুলোর মতোই হবে’।

এর আগে, এশিয়ায় প্রথম ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছিল সিঙ্গাপুর। এছাড়া মডার্না ও সিনোভ্যাকসহ একাধিক সম্ভাব্য টিকার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিও করেছে দেশটি।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিঙ্গাপুরে বসবাসরত ৫ কোটি ৭০ লাখ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত টিকার ডোজ সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে দেশটির সরকার।

সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই তা প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছিল দেশটির সরকার। কয়েক লাখ অভিবাসী শ্রমিক থাকা সত্ত্বেও গত কয়েক মাসে সিঙ্গাপুরে হাতে গোনা কয়েকজন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সবচেয়ে কম কোভিড আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে অন্যতম সিঙ্গাপুর। এখন পর্যন্ত দেশটিতে কোভিড সংক্রমণে মারা গেছেন মাত্র ২৯ জন।  

টিকার নিরাপত্তার বিষয়ে জনমনে আস্থা সৃষ্টিতে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হিসিয়েন (৬৮) বলেন, দেশে প্রথম দিকে যারা টিকা নেবেন, সেই তালিকায় তিনি এবং তার মন্ত্রিসভার সহকর্মীরা থাকবেন। 

পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে শারীরিকভাবে সুস্থ দেশের সব নাগরিককে টিকা নিতে উৎসাহ দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার এক ফেসবুক বার্তায় লি বলেন, ‘এ কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে মহামারির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ের এক নতুন অধ্যায় শুরু হলো। এই টিকা একদিকে যেমন বর্তমান কোভিড-১৯ পৃথিবীতে বেঁচে থাকার চাবিকাঠি, তেমনি এই দুর্যোগকে পেছনে ফেলে একটি সুন্দর পৃথিবীর দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রধান পাথেয়।’

সূত্র: এনডিটিভি।

এসএমডব্লিউ/এসএস