মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানি ও ইরাকি মিলিশিয়া নেতা আবু মাহদি আল মুহান্দিসের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে ইরাকে হাজার হাজার মানুষ শোক পদযাত্রা করেছেন। 

শনিবার সন্ধ্যার দিকে ইরাকের হাজার হাজার মানুষ বাগদাদ বিমানবন্দর মহাসড়কে এই শোক পদযাত্রায় যোগ দেন। গত বছরের ২ জানুয়ারি এই বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ঘাতক ড্রোন হামলায় ইরানি সামরিক জেনারেল ও মিলিশিয়া নেতার প্রাণহানি ঘটে।  

মহাসড়কে হাজারও মানুষের পদযাত্রায় অনেকের হাতে সোলেইমানি ও আল-মুহান্দিসের ছবি দেখা যায়। এ সময় সড়কের পাশে তাবু টানিয়ে সেখান থেকে পদযাত্রায় অংশ নেয়া লোকজনকে খাবার ও পানীয় সরবরাহ করেন স্বেচ্ছাসেবীরা।

বোমা হামলার স্থানে নিহত কাসেম সোলেইমানি ও আবু মাহদি আল মুহান্দিসের ছবি টাঙিয়ে লাল রশিতে ঘিরে দেয়া হয়। এর চারপাশে মোমবাতি প্রজ্বলন করে শোক পালন করেন পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা।

জেনারেল কাসেম সোলেইমানি ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। দেশের বাইরে বিশেষ করে ইরাক, লেবানন এবং সিরিয়ায় ইরানের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ধরনের অভিযান তার নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।

সোলেইমানিকে গুপ্তহত্যার ঘটনায় এই অঞ্চলে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা ব্যাপক আকার ধারণ করে। যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিনিধি চার্লস স্ট্র্যাটফোর্ড বাগদাদ থেকে জানান, রোববারও ইরাকজুড়ে একই ধরনের শোক মিছিল হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

ইরানের শীর্ষ এই সেনা জেনারেল হত্যাকাণ্ডের বর্ষপূর্তি ঘিরে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেহরানের উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে লেখা এক চিঠিতে ওমান সাগর এবং উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সম্প্রসারণ ও তেহরানের বিরুদ্ধে ভূয়া তথ্যের বিস্তৃতি, ভিত্তিহীন অভিযোগ এবং হুমকিমূলক বাগাড়ম্বরের নিন্দা জানায় ইরান।

একদিন আগে ইরানকে বার্তা দিতে উপসাগরীয় অঞ্চলের আকাশে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম দুটি মার্কিন বি-৫২ বোমারু বিমান টহল দেয়।

এদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মধ্যপ্রাচ্যে আগুন নিয়ে না খেলতে সতর্ক করে দিয়েছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, বাগদাদ থেকে পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যে জানতে পেরেছি, ইরাকে বিভিন্ন মার্কিন অবস্থানে হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র করছে ইসরায়েল। একইসঙ্গে সেই হামলার দায় ইরানের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে ক্ষমতা থেকে বিদায়ের আগে ট্রাম্পকে একটি বানোয়াট যুদ্ধে জড়ানোরও চেষ্টা চলছে।

সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স।

এসএস