বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে চার বছর দায়িত্বপালন করার পর এবার বিদায় নেওয়ার দোরগোড়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে আর দু’সপ্তাহ হয়তো থাকতে পারবেন তিনি। তবে শেষটা সুন্দর করার চেয়ে বিদায়ের এই মুহূর্তে এসেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ট্রাম্পের।

প্রশ্ন উঠতে পারে, ক্ষমতার একেবারে শেষ দিনগেুলোতে এসে আর কোন বিতকের্তই বা জড়াতে পারেন এই ধনকুবের প্রেসিডেন্ট! তবে এবার নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কারণে বেশ ভালোভাবেই আবারও বিতর্কে জড়িয়েছেন ট্রাম্প। ক্ষমতার একেবারে শেষ প্রান্তে এসে এ বার ভোটের হিসাব পাল্টে দেওয়ার জন্য সরকারি কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টসহ দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে সেই কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ডিং ইতোমধ্যেই সামনে এসেছে। আর তাতেই ট্রাম্প যেন আবারও খাদের কিনারে। এমনকি বিদায়ের মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি থাকলেও ট্রাম্পকে এখনই অভিশংসন (ইমপিচ) করার দাবিও করছেন অনেকে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট ভোটের হিসেব পাল্টে দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের এই গোপন ফোনকল প্রকাশ করে। তারপর যুক্তরাষ্ট্রের অন্য সংবাদমাধ্যমগুলোতেও সেই ফোনকলের রেকর্ডিংটি ছড়িয়ে পড়ে।

ফাঁস হওয়া ফোনকলে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সেক্রেটারি ব্র্যাড র‌্যাফেন স্পার্জারকে নিজের (ট্রাম্পের) জন্য প্রায় ১২ হাজার ভোট জোগাড় করে দিতে বলেন ট্রাম্প। তা না হলে তাকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলে ব্র্যাডকে হুমকিও দেন তিনি। তবে রিপাবলিকান সদস্য হওয়া সত্ত্বেও ট্রাম্পের আবদার মেনে ভোটগণনায় হস্তক্ষেপ করতে রাজি হননি ব্র্যাড।

ফাঁস হওয়া ফোনকলের ব্যপ্তি চার মিনিট ২০ সেকেন্ড। তাতে ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়,‘জর্জিয়ার মানুষ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ক্ষোভে ফেটে পড়ছে গোটা দেশ। আপনিই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন। ভোট পুনর্গণনা হয়েছে বলতেই পারেন আপনি। তাতে কোনও দোষ নেই। আমার কেবল ১১ হাজার ৭৮০ ভোটের প্রয়োজন। জর্জিয়া আমরাই জিতেছি। এ বার বলুন ব্র্যাড, আপনি কি করবেন? নির্বাচনে আমরাই জিতেছি। এ ভাবে আমাদের হাত থেকে জয় ছিনিয়ে নেওয়া উচিত নয়। (এটা না করলে) এর চড়া মূল্য দিতে হতে পারে।’

গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেকটোরাল ভোট তো বটেই, পপুলার ভোটেও (জনগণের সরাসরি ভোট) ট্রাম্পকে পরাজিত করেছেন বাইডেন। কিন্তু শুরু থেকেই বাইডেনের জয় মানতে নারাজ ট্রাম্প। বরং ভোট গণনায় কারচুপি হয়েছে বলে একের পর এক অভিযোগ করেই যাচ্ছেন তিনি।

এমনকি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে আদালতে গেলেও খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে ট্রাম্পকে। আর এবার গোপন কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিং ঘিরে বিদায়ের আগে নতুন করে বিতর্কে জড়ালেন তিনি।

টিএম