করোনায় মৃতদের ৫৬ শতাংশের বয়স ২০ থেকে ৪৯ বছরের মধ্যে
করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত ভারতের পরিস্থিতির উন্নতির যেন কোনো লক্ষণ নেই। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যুর মিছিল চলছেই। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা রয়েছে চার হাজারের আশেপাশে। তবে সমগ্র ভারতের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলীয় কর্নাটক রাজ্যের পরিস্থিতি যেন একটু বেশিই খারাপ। কারণ গত ২ মাসে কর্নাটকে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে ২০ বছর থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের সংখ্যাই বেশি।
পরিসংখ্যান বলছে, করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ তরুণ প্রজন্মের ওপর বেশ নির্মম প্রভাব ফেলছে। চিকিৎসকরা বলছেন, কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে খুব কম সংখ্যায় অল্প বয়সীরা সংক্রমিত হয়েছিলেন বা তাদের মৃত্যু হয়েছিল। আর মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখন অল্প বয়সীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। তাদের আইসিইউ বেডেরও প্রয়োজনও হচ্ছে বেশি। আর তা মোট আইসিইউ বেডের ৩০ শতাংশ।
বিজ্ঞাপন
ভারতের কর্নাটকের জয়নগর শহরের সাগর হাসপাতালের মেডিকেল পরিচালক মহেন্দ্র কুমার বলছেন, বেশিরভাগ তরুণ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা ভাবছেন। চলতি বছরের ১৭ মার্চ থেকে ১৭ মের মধ্যে ২০ বছর থেকে ৪৯ বছর বয়সী ৪ হাজার ৪৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের মধ্যে ২ হাজার ৪৬৫ জন মারা গেছেন। যা প্রায় ৫৬ শতাংশ।
বিজ্ঞাপন
ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) কোভিড রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, এই তরুণদের বেশিরভাগই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য ছিলেন। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে পরিবারের একমাত্র সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তরুণদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ২০ বছর ধেকে ৪৯ বছর বয়সী ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। ৩০ বছর থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৫ লাখ ১০ হাজার। আর ৪০ বছর থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে প্রায় ৪ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আগে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার ধীর গতি উদ্বেগের বিষয়। আর এই ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর অন্যতম কারণ, টিকা প্রয়োগের প্রথম ধাপে অগ্রাধিকারের তালিকায় ছিলেন না ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীরা। এছাড়াও সাবধানতা অবলম্বন না করা, সামাজিক দূরত্ব না মানা এবং মাস্ক না পরাও তাদের মৃত্যুর গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
টিএম