ই-কমার্স জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান আলিবাবা ও অ্যান্ট গ্রুপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা চীনা ধনকুবের জ্যাক মার কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। অ্যান্ট গ্রুপের বিরুদ্ধে চীনা নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো তীব্র কড়াকড়ি আরোপ করায় এই ধনকুবের নিখোঁজ রয়েছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে তাকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না বলে খবর দিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

সম্প্রতি চীনের অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধিনিষেধ আরোপের ফলে নিজের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রেক্ষিতেই আলোচনায় আসেন ৫৬ বছর বয়সী চীনা ব্যবসায়ী জ্যাক মা। গত ডিসেম্বরে চীন সরকারের অধীন আইনানুগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের’ অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে ‘চীনের অ্যামাজন’ নামে পরিচিত এশিয়ার শীর্ষ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবার বিরুদ্ধে।

এর আগে গত নভেম্বরে প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং (ফাইনটেক) প্রতিষ্ঠান অ্যান্ট গ্রুপের আইপিও শেয়ার হংকং এবং সাংহাইয়ের শেয়ার বাজারে ছাড়ার বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আলিবাবা ও অ্যান্ট গ্রুপ- দু’টি প্রতিষ্ঠানেরই স্বত্ত্বাধিকারী জ্যাক মা।

গত অক্টোবরে সাংহাইতে এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার সমালোচনা করেছিলেন মা। সেখানে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ‘বুড়ো মানুষদের ক্লাব’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘পুরনো দিনের চিন্তা-ভাবনা প্রয়োগ করে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ সাজাতে পারব না।’ 

এরপরই গত ৫ নভেম্বর হংকং এবং সাংহাই শেয়ার বাজার থেকে অ্যান্ট গ্রুপের ৩৭ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের আইপিও শেয়ার প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সাংহাই এবং হংকংয়ের শেয়ারবাজারে এ যাবৎ সর্ববৃহৎ আইপিও শেয়ারের অফার প্রত্যাহারের জন্য অ্যান্ট গ্রুপকে দু’দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয় সংস্থার পক্ষ থেকে।

এরপর একই মাসে আলিবাবার চেয়ারম্যান পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয় জ্যাক মাকে; পাশাপাশি তার দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চীন সরকার।

অ্যান্ট গ্রুপের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, জ্যাক মার ক্ষতি করার জন্য অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ব্যবহার করছে সরকার। তবে তিনি এখন কোথায় কী অবস্থায় রয়েছেন, তা জানাতে চাননি ওই মুখপাত্র।

ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, চীনের ধনী মানুষদের তালিকায় শীর্ষে থাকা জ্যাক মার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। তবে সম্প্রতি চীনের সরকার দেশের অর্থনৈতিক প্রযুক্তি শিল্পে কড়াকড়ি নিয়ম আরোপ করায় গত দু’ মাসে তার ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি (১২ বিলিয়ন) ডলার।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার, এনডিটিভি।

এসএমডব্লিউ