আনারসের পাতার আঁশ বা তন্তু থেকে ড্রোনের ফ্রেম বা কাঠামো তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন মালয়েশিয়ার একদল প্রযুক্তিবিদ। দেশটির পুত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এই জৈব উপাদান ব্যবহার করে ইতোমধ্যে কয়েকটি নমুনা ড্রোন তৈরি করা হয়েছে। পরীক্ষায় সেগুলোর সাফল্যও প্রমাণিত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে হুলু লাঙ্গাট এলাকা আনারস উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য বিখ্যাত। প্রক্রিয়াজাতকরণের পর আনারসের বর্জিত অংশ ব্যবহারের উপযোগী করা যায় কিনা তা পরখ করতে প্রায় তিন বছর আগে পুত্রা বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রকল্প শুরু করেছিল।

পুত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও প্রকল্পের প্রধান মোহামেদ তারিক হামিদ সুলতান আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, আনারসের পাতা থেকে সংগৃহীত তন্তু উড়োজাহাজ নির্মাণ প্রকৌশল, বিশেষ করে ড্রোন নির্মাণ প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা সম্ভব। ড্রোনের ফ্রেম বা কাঠামো নির্মাণের জন্য এই তন্তু বেশ ভালোভাবেই উপযোগী।’

ইতোমধ্যে এই জৈব উপাদান ব্যবহার করে কয়েকটি ড্রোন প্রস্তুত করা হয়েছে উল্লেখ করে এই অধ্যাপক বলেন, এই তন্তু দিয়ে তৈরি ড্রোনগুলো অন্যান্য ড্রোনের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি শক্তিশালী এবং হালকা এবং অর্থনৈতিকভাবে অধিক সাশ্রয়ী।

এই প্রযুক্তিতে নির্মিত ড্রোন বিকল হয়ে গেলে, দু’সপ্তাহের মধ্যে তা মাটিতে মিশে যায় বলেও জানিয়েছেন মোহামেদ তারিক।

নমুনা ড্রোনগুলো ৩ হাজার ২৮০ ফিট পর্যন্ত উচ্চতায় উঠতে পারে এবং এক নাগাড়ে ২০ মিনিট পর্যন্ত উড়তে সক্ষম।

২০১৭ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পে পুত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছে মালয়েশিয়ার ড্রোন ব্যবহারকারীদের সংস্থা মালয়েশিয়ান আনম্যানড ড্রোনস অ্যাক্টিভিস্ট সোসাইটি। সংস্থার মুখপাত্র উইলিয়াম রবার্ট আলভিসে রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল মূলত কৃষকদের সহযোগিতা করার। এমন কিছু আমরা উদ্ভাবন করতে চেয়েছিলাম যা কৃষি উৎপাদন বাড়াবে, কৃষকদের কাজকে সহজতর করবে এবং একই সঙ্গে হবে পরিবেশবান্ধব।’

এসএমডব্লিউ