জঙ্গিবাদে অর্থায়নের অভিযোগে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই-মোহাম্মদের শীর্ষ নেতা মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন দেশটির সন্ত্রাসবাদবিরোধী আদালত।

পাকিস্তান পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী বিভাগের (সিটিডি) আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিচারক নাতাশা নাসিম সুপ্রা এই পরোয়ানা জারি করেন।

সিটিডির এক কর্মকর্তা জানান, জয়েশ-ই-মোহাম্মদের সাংগঠনিক বিস্তার, অর্থায়ন এবং জিহাদি বই প্রকাশ ও বিক্রিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে।

তিনি জানান, ২০১৯ সালে কাশ্মিরে পুলওয়ামা হামলার পর জয়েশ-ই-মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে পাকিস্তানের পাঞ্জাব পুলিশ। পাঞ্জাবের প্রাদেশিক রাজধানী লাহোর থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে গুজরানওয়ালার একটি বাড়ি থেকে সে সময় বিপুল পরিমাণ অর্থসহ গ্রেফতার করা হয় ছয় জয়েশ নেতাকে। এ ঘটনায় গুজরানওয়ালা আদালতে একটি মামলা করে সিটিডি। পরে সেই মামলা স্থানান্তর করা হয় পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে।

ওই মামলা আমলে নিয়ে সিটিডির আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার মাসুদ আজহারকে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারি করলেন আদালত। সিটিডির ওই কর্মকর্তা বলেন, ওই ছয় জঙ্গিকে গ্রেফতারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে জানা যায়, সংগঠনের বিস্তারের অর্থ সংগ্রহ, জিহাদি বই প্রকাশ ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন মাসুদ।

তবে বর্তমানে তিনি পাকিস্তানে অবস্থান করলেও ঠিক কোথায় রয়েছেন, তা এখনো জানা যায়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

কাশ্মির নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতময় পরিস্থিতির মধ্যে গত শতকের নব্বই এর দশকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরে জয়েশ-ই-মোহাম্মদের উদ্ভব হয়। কাশ্মিরকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করা ছিল এই জঙ্গি সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য।

ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার পেছনে হাত রয়েছে মাসুদের। ২০০১ সালে সংসদে হামলা, ২০০৮ সালে মুম্বাই, ২০১৬ সালে পাঠানকোট হামলা এবং ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে পুলওয়ামা নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত মাসুদ। তাকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদও।

এর আগে জঙ্গিবাদে অর্থায়নের দায়ে গত ২ জানুয়ারি পাকিস্তানভিত্তিক অন্যতম বৃহৎ জঙ্গি সংগঠন লস্কর ই তাইয়েবার শীর্ষ নেতা জাকিউর রহমান লাকভিকে গ্রেফতার করে সিটিডি। প্রায় একদশক আগে মুম্বাই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী লাকভিও জাতিসংঘের ঘোষিত জঙ্গি তালিকায় রয়েছেন।

সূত্র: আনন্দবাজার

এসএমডব্লিউ