যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে হামলা চালাতে সমর্থকদের প্ররোচণা দিয়েছিলেন; এমন অভিযোগেই জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও ইন্সটাগ্রামে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফেসবুক-ইন্সটাগ্রামে তার অ্যাকাউন্টের ওপর অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকলেও ১২ ঘণ্টা পর নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট ফিরে পেয়েছেন তিনি। আর এর পরপরই ফের টুইটারে সরব হয়েছেন ট্রাম্প।

অ্যাকাউন্ট ফিরে পেয়ে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় টুইটারে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। অথচ গতকালের আগ পর্যন্ত সুর ছিল অন্যরকম বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির প্রেসিডেন্টের। 

ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল অনুমোদন করেছে কংগ্রেস। আগামী ২০ জানুয়ারি নতুন প্রশাসন দায়িত্বগ্রহণ করবে। এই মুহূর্তে দরকার ক্ষত নিরাময় ও সংকটের সমাধান।

মার্কিন কংগ্রেসে ব্যাপক ভাংচুর এবং বিশ্বনেতাদের নিন্দার একদিন পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন অঙ্গীকার করলেন।

এই বক্তব্যের মাধ্যমে গত বছরের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের পরাজয় এই প্রথম প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন ট্রাম্প। এমনকি গত বুধবারও তিনি নির্বাচনে পরাজয়ের বিষয়টি স্বীকার না করে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছিলেন। কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই নির্বাচনের কারচুপির অভিযোগ করে ফলাফল প্রত্যাখান করে আসছিলেন তিনি।

এদিকে বৃহস্পতিবার দেওয়া সর্বশেষ ওই ভিডিওবার্তায় রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে তার সমর্থকদের চালানো নজিরবিহীন হামলাকে ‘‘বর্বরোচিত হামলা’’ বলে মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে নিজের ‘‘দুর্দান্ত সমর্থকদের’’ প্রশংসাও করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন,‘আমাদের অসাধারণ যাত্রা মাত্র শুরু হল।’

তবে ভোটে কারচুপির যে অভিযোগ ট্রাম্প এতোদিন ধরে করে আসছিলেন এবং যার প্রেক্ষিতে বুধবার তার কট্টর সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালিয়েছিল, সেই অভিযোগ সম্পর্কে নতুন ভিডিওবার্তায় তিনি তেমন কিছু বলেননি।

ট্রাম্প এমন এক সময়ে এই কথা বলছেন- যখন শীর্ষ ডেমোক্র্যাটিক নেতারা তাকে অনতিবিলম্বে প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বলেছেন। যদিও ১৩ দিন পর তার এমনিতেই পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা রয়েছে।

এদিকে ক্যাপিটল ভবনে সহিংসতার পর হোয়াইট হাউসের বেশ কিছু কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। সবশেষ খবরে বলা হয়, ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মিক মালভেনি পদত্যাগ করেছেন। তিনি ছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের একজন।

এর আগে পদত্যাগ করেন ডেপুটি প্রেস সচিব সারা ম্যাথুজ, ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ স্টেফানি গ্রিশাম, হোয়াইট হাউসের সোশ্যাল সেক্রেটারি রিকি নিচেটা ও উপদেষ্টা ম্যাট পটিঙ্গার।

মার্কিন সিনেটে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা চাক শুমার তীব্র সমালোচনার পর সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ করে অবিলম্বে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছেন। একই আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিও।

টিএম