টোসিলিজুমাব নামের একটি বাতের ওষুধ গুরুতর করোনা আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি এক চতুর্থাংশ হ্রাস করে বলে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় জানা গেছে।

যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থায়নে ব্রিটেনের ইম্পেরিয়াল কলেজের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, গুরুতর আক্রান্ত কোনো রোগীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি এই ওষুধ দেয়া হয়, সেক্ষেত্রে ওই রোগীর মৃত্যুঝুঁকি কমে ২৪ শতাংশ।

যেসব রোগীর চিকিৎসায় টোসিলিজুমাব ব্যবহার করা হয়েছে, অন্যান্য রোগীদের তুলনায় তাদের অনেক কম সময় আইসিইউতে থাকতে হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য এতদিন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল ওষুধ ধরা হতো কোর্টিকোস্টেরয়েড গ্রুপের ওষুষ ডেক্সোমেথাসনকে। এটিও যুক্তরাজ্যের তৈরি ওষুধ। এখন এই তালিকায় অন্তর্ভূক্তির অপেক্ষায় রয়েছে টোসিলিজুমাব। গবেষণার অন্যতম একটি পর্যায় পিআর রিভিয়্যু প্রক্রিয়া শেষ হলেই করোনার দ্বিতীয় সফল ওষুধ হিসেবে তালিকাভূক্ত হবে এতদিন বাতের ব্যাথা প্রশমনের জন্য ব্যবহৃত টোসিলিজুমাব।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে ব্রিটেনের হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে যেসব রোগী মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে যাচ্ছেন, তাদের জন্য এই গবেষণা সুখবর বয়ে এনেছে উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের উপ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জোনাথন ভ্যান ট্যাম এক বার্তায় বলেন,‘ গবেষণার ফলাফল বলছে, টোসিলিজুমাব আইসিইউতে ভর্তি রোগীদের মৃত্যুহার দ্রুত এবং উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস করে। ব্রিটেনের হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এই ওষুধ রোগীদের জীবন ফিরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি হাসপাতালগুলোর চাপ কমানোর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমরা মনে করি।’

সম্প্রতি ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার পর সংক্রমণের হার অনেক বেড়ে গেছে। গত ডিসেম্বরের প্রথমভাগ থেকে দেশটিতে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ব্রিটেনে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ হাজার ৬১৮ জন এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৬০০ জন।

টোসিলিজুমাব ওষুধটি করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য দেশের ডাক্তারদের উৎসাহ দিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ সামনে অপেক্ষমান সপ্তাহ ও মাসগুলোতে যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলোর চাপ কমাতে কার্যকর হাতিয়ার এসে গেছে। এই ওষুধ হাজার হাজার করোনা রোগীর জীবন ফিরিয়ে দিতে সক্ষম।’

সূত্র: আলজাজিরা।

এসএমডব্লিউ