করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মালয়েশিয়া জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দেশটির বাদশাহ আল-সুলতান আবদুল্লাহ কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে দেশজুড়ে এ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।

মালয়েশিয়া রাজপ্রাসাদ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে কি-না তা জানতে আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত জরুরি অবস্থা বহাল থাকবে। সোমবার (১২ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী তান শ্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন ও রাজার সাক্ষাতের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী তান শ্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়ে বিশেষ ভাষণ দেবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে রাজার মুখ্য সচিব তান শ্রী মোহাম্মদ জুকি আলী জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থা ১ আগস্টের আগে শেষ হবে কি-না তা নির্ধারণ করতে সরকার এবং বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি জরুরি কমিটি গঠন করা হবে।

গত বছরের অক্টোবর মাসে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন দেশে জরুরি অবস্থা জারির প্রস্তাব দেন রাজা আল-সুলতান আব্দুল্লাহর কাছে।

এর আগে সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বিশেষ ভাষণে করোনা সংক্রমণ রোধে আবারও মালয়েশিয়ায় লকডাউন ঘোষণা করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী তান সেরী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন এ ঘোষণা দেন।

১৩ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির কুয়ালালামপুর, পুত্রাজায়া, সেলঙ্গর, সাবাহ, জোহর, মালাকা, পুলাউ পেনাং ও লাবুয়ান অঞ্চলে জারি করা হয়েছে ১৪ দিনের মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার বা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন (এমসিও)।

লকডাউন চলাকালীন সময়ে উৎপাদন, নির্মাণ, পরিষেবা, বাণিজ্য ও বিতরণ, বৃক্ষরোপণ ও পণ্যাদি অপরিহার্য অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলি পরিচালনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

গত মার্চ মাসে সরকার প্রথমে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮৮ এবং পাশাপাশি পুলিশ অ্যাক্ট ১৯৬৭ এর অধীনে ধর্মীয়, খেলাধুলা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গণসমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। সে সময় সুপার মার্কেট, পাবলিক মার্কেট, বিভিন্ন জিনিসপত্র ও  নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করা দোকান ছাড়া সব উপাসনা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।

তবে সরকার ধীরে ধীরে তা শিথিল করে। বেশিরভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠান খোলার চেষ্টা করে এবং বেশিরভাগ সামাজিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অনুমতি দেয়। শর্তসাপেক্ষে বিভিন্ন ধরনের এমসিওর অধীনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছিল। কিন্তু তৃতীয় দফায় করোনা সংক্রমণে প্রতিদিনই বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। 

সম্প্রতি এ সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়ানোর পর আবারও মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (এমসিও) চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলো দেশটির সরকার। এমসিও চলাকালে গেল বছরের মার্চের মতো আবারও ১৪ দিন নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করতে হবে দেশটির জনগণকে।

সর্বশেষ খবর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৩৮ হাজার ২২৪। দেশটিতে করনায় মারা গেছেন ৫৫৫ জন। করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ১১৫ জন।

এমএইচএস