জো বাইডেন তার ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে গেছেন। কিন্তু ক্ষমতায় বসার প্রথম দিন থেকেই তিনি যে কী বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন, তা হয়তো তিনি কখনও প্রত্যাশাও করেননি। কী সেই চ্যালেঞ্জগুলো?

প্রথম দশ দিনেই তিনি বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ জারির কাজ শুরু করছেন। এমনকি বুধবার (২০ জানুয়ারি) শপথ গ্রহণ করেই ১৫টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলে নির্বাহী আদেশ জারি করা যায়। এর জন্য কংগ্রেসের অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না।

এই তালিকায় সবার ওপরে আছে দুটি বিষয়। এক- বিতর্কিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাতিলের বিষয়। তার পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘নিরাপত্তা হুমকির’ কারণ দেখিয়ে প্রধানত যেসব মুসলিম দেশ থেকে আমেরিকায় ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন, সেগুলো প্রত্যাহার। আর দ্বিতীয়টি হল প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে আবার যোগদান।

এছাড়াও নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে যে বিষয়গুলোর দিকে তিনি অবিলম্বে নজর দিতে চান বলে জানা যাচ্ছে সেগুলো হল:

করোনা মহামারি মোকাবিলা
আমেরিকায় করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৪ লাখের বেশি মানুষ। এই মহামারি এবং দেশটিতে এর সূদুরপ্রসারী প্রভাব মোকাবিলায় নতুন প্রশাসনের অগ্রাধিকারের তালিকায় সবার ওপরে থাকবে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন,‘আমাদের প্রশাসনের জন্য এটা অন্যতম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লড়াই।’

ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই কোভিড মোকাবেলায় নিজের কৌশল বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির নতুন এই প্রেসিডেন্ট। তাই দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত ভবন এবং এক অঙ্গরাজ্য থেকে অন্য অঙ্গরাজ্যে ভ্রমণের সময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে নির্বাহী আদেশ জারি করতে পারেন বাইডেন।

তবে বাইডেনের জন্য কাজটি সহজ নয়। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের গভর্নররা এতদিন মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার বিরোধিতা করেছেন, তারা হঠাৎ করেই যে তাদের মনোভাব বদলাবেন এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই।

আর সারা দেশে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার জন্য আদেশ জারি করার কোনো আইনগত পথ প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় কার্যত দেওয়া নেই।

বাইডেন এই সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়েছেন বলেই মনে হচ্ছে এবং গর্ভনরদের মত বদলাতে রাজি করনোর জন্য ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

গভর্নররা যদি তার কথা শুনতে রাজি না হন, তাহলে মেয়র এবং পৌর এলাকার কর্মকর্তাদের প্রতি এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বাইডেন আহ্বান বলে অঙ্গীকার করেছেন। তবে সেটা কীভাবে কার্যকর করা হবে সে বিষয়ে কিছু এখনও বলা হয়নি।

তবে প্রথম দিনে জারি করা নির্বাহী আদেশে ফেডারেল অফিসগুলোতে মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়েছেন বাইডেন।

১০০ দিনে ১০০ মিলিয়ন ডোজ টিকা

টিকাদান প্রক্রিয়ায় গতি সঞ্চার করতে চান বাইডেন। ক্ষমতায় প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে দশ কোটি মানুষকে করোনার টিকার অন্তত প্রথম ডোজ দিয়ে দেওয়ায় হচ্ছে বাইডেনের লক্ষ্য।

টিকা কর্মসূচি দ্রুততার সাথে করার একটা উপায় হচ্ছে- যে পরিমাণ টিকা প্রস্তুত আছে তার একটা অংশ দ্বিতীয় ডোজের জন্য মজুত না রেখে পুরোটাই একসঙ্গে ছেড়ে দেওয়া।

টিকা নিয়েছেন বাইডেন নিজেও

এছাড়াও দ্রুত কোভিড পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু ও তা উন্নত করতে এবং জাতীয় স্তরে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ ও পিপিই-র সরবরাহ ব্যবস্থা কার্যকর রাখতে বাইডেন নির্বাহী পদক্ষেপ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) আবার যোগদান

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার অভিযোগ ছিল চীনে এই ভাইরাস প্রথম ধরা পড়ার পর সংস্থাটি কোভিডের বিস্তার ঠেকাতে এবং সংস্থায় ‘জরুরিভাবে প্রয়োজনীয় সংস্কার’ আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

তবে ট্রাম্পের সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও ওই সংস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও বাইডেনের কার্যতালিকায় রয়েছে। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন বাইডেন।

অর্থনৈতিক পদক্ষেপ

ভাড়াটে ও বাড়ির মালিকদের জন্য ছাড়
বাইডেনের প্রশাসনিক টিমের সদস্যরা বলেছেন, বাসা ভাড়া না দিতে পারার জন্য ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ বা বাড়ি কেনার বন্ধকের অর্থ পরিশোধ করতে না পারলে বাড়ি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার মেয়াদ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা নতুন প্রেসিডেন্টের রয়েছে। মহামারি শুরু হবার পর এই স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছিল।

এছাড়াও সরকারের কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে শিক্ষার্থীদের দেয়া ঋণের কিস্তি সুদসহ পরিশোধের প্রক্রিয়াও এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। সেটিও চালু রাখতে চান বাইডেন।

বাইডেন শিবির আরও জানাচ্ছে, ‘শ্রমজীবী পরিবারগুলোকে অর্থনৈতিক সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারেও অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের’ জন্য ক্যাবিনেট সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রেসিডেন্ট নির্দেশ দিতে পারেন।

১.৯ ট্রিলিয়ন ডলার করোনাভাইরাস অর্থনীতি
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিপর্যস্ত আমেরিকান অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনের জন্য গত সপ্তাহে বাইডেন ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। বাইডেনের মতে, ‘মানুষের দুঃসহ মাত্রার দুঃখকষ্ট যে একটা সংকটময় পরিস্থিতে পৌঁছেছে, তা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে এবং এখন নষ্ট করার মত সময় হাতে নেই’।

এই প্যাকেজ কংগ্রেস অনুমোদন করলে তা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সদ্য দায়িত্ব নেওয়া নতুন এই প্রেসিডেন্ট। স্কুল নিরাপদে খোলার জন্যও এই প্যাকেজে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ক্ষমতার প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে নিরাপদ পরিবেশে স্কুল আবার চালু করতেও আগ্রহী তিনি।

গত ডিসেম্বরে কংগ্রেস ৯০০ বিলিয়ন ডলারের একটি আর্থিক প্যাকেজ অনুমোদন করেছিল। আর এটা তার ওপর বাড়তি প্রণোদনা প্যাকেজ।

রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা এই বিলের কিছু অংশের বিরোধিতা করতে পারেন এমন সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ মহামারির প্রভাব সামাল দিতে আমেরিকা যে ঋণ নিয়েছে তার বোঝা বাইডেনের ঘোষিত প্যাকেজের ফলে আরও বাড়বে। রিপাবলিকানদের মতামত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পরিকল্পিত এই বিল পাশ হতে হলে রিপাবলিকানদের সমর্থনের প্রয়োজন হবে বাইডেনের।

কংগ্রেসের উভয় কক্ষেরই নিয়ন্ত্রণ এখন ডেমোক্র্যাটদের হাতে, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা খুবই অল্প ব্যবধানের।

ট্রাম্পের কর সুবিধা বাতিল

বাইডেন তার অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনায় শুধু কোভিড মোকাবেলার জন্য অর্থ সহায়তার প্রস্তাবই রাখেননি। ট্রাম্প যে কর ছাড় দিয়েছেন তা বাতিল করার প্রতিশ্রুতিও তিনি দিয়েছেন।

ট্রাম্প তার ক্ষমতার প্রথম দিকে ২০১৭ সালে কর ছাড় অনুমোদন করেন। বাইডেন শিবির বলছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত কেবল ধনী আমেরিকানদের পকেট ভারী করেছে। ছোটখাট ব্যবসায়ীরা এই ছাড়ের সুবিধা মোটেও পাননি, এই সুবিধা ভোগ করেছেন বড় বড় ব্যবসায়ীরা।

তাই ব্যবসায়ে বিদেশ থেকে অর্জিত অর্থের ওপরও কর বসানোর পরিকল্পনা দিয়েছেন বাইডেন। তবে বাইডেনের নতুন কর নীতিকেও কংগ্রেসের অনুমোদন পেতে হবে।

প্যারিস চুক্তিতে ফিরে যাওয়া
ক্ষমতা গ্রহণ করার পর প্রথম দিনই প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে আমেরিকাকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন বাইডেন। এই চুক্তিতে বিশ্ব নেতারা পৃথিবীর তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে রাখার অঙ্গীকার করেছিলেন, যেটা ছিল শিল্পায়নের আগের বিশ্বের তাপমাত্রা। তারা অঙ্গীকার করেছিলেন সম্ভব হলে তাপমাত্রা তারা এক দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নামিয়ে আনার চেষ্টা করবেন।

২০১৫ সালে সম্পাদিত ওই চুক্তি থেকে একক সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন ট্রাম্প। আমেরিকাই ছিল ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসা বিশ্বের প্রথম দেশ।

বাইডেন বলেছেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঠেকানোর জন্য আমেরিকা তার উদ্যোগ আরও বাড়াবে এবং প্রেসিডেন্ট পদে তার প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে তিনি বিশ্ব জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবেন।

তিনি বলেছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে আমেরিকার কার্বন নিঃসরণের মাত্রা শূন্যে নামিয়ে আনতে এবছরই তিনি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেবেন।

অন্য পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনা
কানাডার আলবার্টা প্রদেশ থেকে মনটানা আর সাউথ ডাকোটার মধ্যে দিয়ে টেক্সাস পর্যন্ত তেলের পাইপলাইন বসানোর এক বিতর্কিত প্রকল্পও বাইডেন ক্ষমতা হাতে নেওয়ার পরই বাতিল করে দিয়েছেন। কিস্টোন এক্সএল নামে তেল ও গ্যাস পাইপলাইন বসানোর এই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য ২০১৭ সালে একটি নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প স্বাক্ষর করার পর থেকে গত কয়েক বছর ধরে বিরোধীরা এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে আসছেন।

যানবাহনের কার্বন নিঃসরণের মাত্রা শিথিল করে ট্রাম্প প্রশাসন যে আইন পাশ করেছিল সেটি নিয়েও নতুন করে চিন্তাভাবনার কথা বলেছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, গাড়ি ও ভারী যানবাহনের কার্বন নির্গমনের ক্ষেত্রে শিগগিরই কঠোর বিধিনিষেধ আনা হবে।

তেল ও গ্যাস থেকে মিথেন দূষণের মাত্রা নিয়ে বাইডেন প্রশাসন কঠোর বিধিনিষেধ জারির পরিকল্পনা করছে এবং তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র ইজারা দেওয়ার ব্যাপারেও নীতির পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

অভিবাসন নীতি

ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাতিল
২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে ক্ষমতা গ্রহণ করার মাত্র সাতদিনের মাথায় কিছু দেশ থেকে আমেরিকায় ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ট্রাম্প। তবে বুধবার ক্ষমতাগ্রহণের পরই ট্রাম্পের সেই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

মূলত সাতটি মুসলিম প্রধান দেশ থেকে আমেরিকায় ভ্রমণের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, পরে আদালতে এই বিধান চ্যালেঞ্জ করে মামলা চলার পর তালিকায় কিছু রদবদল করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, ভেনেজুয়েলা এবং উত্তর কোরিয়া।

নাগরিকত্ব প্রদান
অভিবাসন নীতির ক্ষেত্রে বাইডেনের আরেকটি বড় প্রতিশ্রুতি হল- তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম দিকেই কংগ্রেসে একটি বিল উত্থাপন করবেন, যার মাধ্যমে নথিবিহীন এক কোটি দশ লাখেরও বেশি অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।

নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিকে বাইডেন ঘোষণা করেছিলেন যে, আমেরিকার দক্ষিণ সীমান্তে বাবা-মায়েদের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া ৫৪৫ জন অভিবাসী শিশুকে আবারও তাদের পরিবারের সঙ্গে একত্রিত করার জন্য তিনি একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করবেন।

সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণ বন্ধ
ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট মেয়াদের আরেকটি বহুল আলোচিত প্রকল্প - আমেরিকা আর মেক্সিকোর মাঝখানে দেওয়াল তোলা- সেই নির্মাণ কাজও বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন।

নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি বলেছিলেন, এই প্রকল্প ‘অর্থের অপচয়’ এবং ‘যেখানে প্রকৃত হুমকি মোকাবেলায় অর্থের প্রয়োজন এই প্রকল্পের কারণে সেসব ক্ষেত্রে অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হচ্ছে না’। শপথ নেওয়ার পরপরই জারি করা নির্বাহী আদেশে তিনি এই প্রকল্পের অর্থায়ন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।

বাইডেন প্রশাসন বলেছে, সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের বদলে অভিবাসনের বৈধতা যাচাইয়ের কর্মসূচি গড়ে তোলার জন্য তারা কেন্দ্রীয় তহবিল বরাদ্দ করতে আগ্রহী।

বর্ণবাদ ও ফৌজদারী বিচারে সংস্কার
কোভিড, অর্থনীতি এবং জলবায়ুর পর চতুর্থ স্থানে রয়েছে বর্ণবাদের সমস্যা। বাইডেন বলেছেন, তিনি দ্রুত এই সমস্যা মোকাবিলার কাজ শুরু করবেন। আবাসন, স্বাস্থ্যসেবাসহ যেসব ক্ষেত্রে বর্ণবৈষম্য প্রকট সেসব ক্ষেত্রকে তিনি অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

প্রথম ১০০ কার্যদিবসের মধ্যে বাইডেন পুলিশ বিভাগের সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু করতে চান। এ লক্ষ্যে তিনি পুলিশের কার্যকলাপের ওপর নজরদারির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি সংস্থা গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এই পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

এলজিবিটি সুরক্ষা
এলজিবিটি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, হিজড়া, তৃতীয় লিঙ্গ ও সমকামীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে তিনি তহবিল বরাদ্দ করবেন।

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং স্কুলে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে বৈষম্য বন্ধে নির্দেশাবলী জারি করবেন। এ বিষয়ক নির্বাহী আদেশও বাইডেন ইতোমধ্যে জারি করেছেন।

আমেরিকান মিত্রদের প্রতি আশ্বাস
বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার মিত্র দেশগুলোর সাথে তিনি দ্রুত যোগাযোগ করবেন। বিশেষ করে যাদের সাথে গতকয়েক বছরে আমেরিকার সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে এবং ‘আমেরিকা তাদের পেছনে রয়েছে (সমর্থন করছে)’ এই প্রতিশ্রুতি তাদের দেবেন।

বাইডেন বলেছেন, আমেরিকা ‘আবার বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি। এটা তাকে প্রমাণ করতে হবে। শুধু ক্ষমতার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে নয় বরং দৃষ্টান্ত দিয়ে ক্ষমতাকে প্রমাণ করতে হবে।’

তিনি বলেছেন, ওভাল অফিসে তার প্রথম কার্যদিবসে তিনি ন্যাটো জোটের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং এই বার্তা দেবেন যে ‘আমরা আবার ফিরে এসেছি এবং আমাদের ওপর আবার আপনারা ভরসা রাখতে পারেন।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা

টিএম