রুশ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন: তুরস্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের পরপরই ন্যাটো মিত্র তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসি।
উভয় দেশই পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হলেও গত বছর রাশিয়ার তৈরি এই অত্যাধুনিক আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি হয়
বিজ্ঞাপন
প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার তৈরি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করায় আঙ্কারার ওপর আগে থেকেই নাখোশ কৌশলগত মিত্র ওয়াশিংটন অবশেষে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো।
উভয় দেশই পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হলেও গত বছর রাশিয়ার তৈরি এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি হয়। এর পর থেকেই আঙ্কারার ওপর নিষেধাঞ্জা আরোপের হুমকি দিয়ে আসছিল ট্রাম্প প্রশাসন। অবশেষে শঙ্কা সত্যি হলো।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ন্যাটো প্রযুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং জোটের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি
এস-৪০০ ন্যাটো প্রযুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং জোটের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি; এমন অভিযোগে তুরস্কের অস্ত্র ক্রয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর সোমবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন।
অবশ্য রাশিয়ার নিকট থেকে ক্ষেপণাস্ত্র কেনার কারণে তুরস্ককে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেওয়া হবে না বলে আঙ্কারাকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল ওয়াশিংটন।
এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ‘রাশিয়ার কাছ থেকে তুরস্ক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার কারণে মার্কিন সামরিক প্রযুক্তি ও সামরিক ব্যক্তিদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।’
যত দ্রুত সম্ভব এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র সংকট সমাধান করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্কে ফিরে আসতে আমি তুরস্ককে অনুরোধ করছি। তুরস্ক ওয়াশিংটনের মূল্যবান বন্ধু এবং একইসঙ্গে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মিত্র দেশ
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শীর্ষ এই মার্কিন কূটনীতিক আরও বলেন, ‘এর ফলে একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সামরিক তথ্যও পাচার হয়ে যাবে রাশিয়ার হাতে। এ ছাড়া তুরস্কের সামরিক বাহিনী ও প্রতিরক্ষা শিল্পেও নজরদারি বাড়বে রাশিয়ার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুরস্কের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বেশ কয়েকবার এসব বিষয় পরিষ্কার করে জানানো হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘তুরস্ক এরপরও রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ক্রয় করে এবং প্রথম চালান হাতে পেয়ে সেগুলো পরীক্ষাও করে। যদিও ন্যাটোর মধ্যে আন্তঃবিনিময়যোগ্য বিভিন্ন বিকল্প প্রতিরক্ষা উপায় তুরস্কের সামনে ছিল।’
পম্পেও বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র সংকট সমাধান করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্কে ফিরে আসতে আমি তুরস্ককে অনুরোধ করছি। তুরস্ক ওয়াশিংটনের মূল্যবান বন্ধু এবং একইসঙ্গে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মিত্র দেশ। আমরা চাই এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বাদ দেয়ার মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গত কয়েক দশক ধরে চলে আসা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ফিরে আসবে তুরস্ক।’
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘উভয় দেশের মধ্যে উদ্ভূত সমস্যা চিহ্নিত করে আলোচনা ও কূটনৈতিকভাবে সেটা সমাধানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে আঙ্কারা।
রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের মহাপরিচালক ইসমাইল দেমিরসহ শীর্ষস্থানীয় আরও তিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা।
আঙ্কারার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এই অন্যায় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে ওয়াশিংটনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এরদোয়ান সরকারের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘উভয় দেশের মধ্যে উদ্ভূত সমস্যা চিহ্নিত করে আলোচনা ও কূটনৈতিকভাবে সেটা সমাধানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে আঙ্কারা।’
সূত্র: বিবিসি
টিএম/এএস