দারিদ্র্য এবং অর্থনৈতিক দূরবস্থা দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে ইসরায়েলে। দেশটির শিশুবিষয়ক সরকারি সংস্থা ইসরায়েল জাতীয় শিশু কাউন্সিলের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে বর্তমানে প্রতি তিনজন শিশুর একজন দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে।

করোনা মহামারি মোকাবিলায় একাধিকবার দেশব্যাপী দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন ও কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে ইসরায়েল সরকার, যার ফলে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।

দেশজুড়ে দারিদ্র্যের এই ভয়াবহ চিত্র ইসরায়েলের বর্তমান স্থবির অর্থনীতির ফলাফল উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ইহুদি ধর্মাবলম্বী শিশুদের ৫৭ শতাংশ এবং আরব-ইসরায়েলি বংশোদ্ভুত শিশুদের ৪৬ শতাংশ বর্তমানে দারিদ্রসীমার নিচে অবস্থান করছে।

মহামারির সময় ইসরায়েলে শিশু নির্যাতনের হারও দ্বিগুণ হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে শিশু কাউন্সিলের প্রতিবেদনে। দেশটির বিভিন্ন পুলিশ স্টেশনে ২০১৯ সালে যেখানে মোট ৬০৯টি শিশু নির্যাতনবিষয়ক অভিযোগ নথিবদ্ধ করা হয়েছিল; ২০২০ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২২৫।

এছাড়া অনলাইন প্ল্যাটফরমে শিশু নিগ্রহের ঘটনারও উর্ধ্বগতি দেখা গেছে ২০২০ সালে। ২০১৯ সালে অনলাইন বুলিং, অনলাইনে যৌন হেনস্তা, আত্মহত্যায় প্ররোচনা এবং কম্পিউটার হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধের শতকরা হার ছিল ৫৭ শতাংশ; মহামারির বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ শতাংশে।

শিশুদের আত্মহত্যার প্রবণতাও বেড়েছে ২০২০ সালে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ এর তুলনায় গতবছর এই হার ছিল ২৪ শতংশ বেশি।

মহমারিতে বেহাল অবস্থায় পড়েছে ইসরায়েলের বিদ্যালয়ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমও। লকডাউনের কারণে বিদ্যালয়গুলো দীর্ঘসময় ধরে বন্ধ থাকায় অনলাইনে স্কুল শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে ইসরায়েল সরকার। শিশু কাউন্সিলের প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলের ৫২ শতাংশ আরবিভাষী শিশু এবং ৩৫ শতাংশ হিব্রুভাষী শিশুর কম্পিউটার নেই। এছাড়া দেশটিতে ৫৭ শতাংশ আরবিভাষী এবং ৩০ শতাংশ হিব্রুভাষী শিশু ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে রয়েছে।

জাতীয় শিশু কাউন্সিলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের জরিপে অংশ নেওয়া ৫০ শতাংশ শিশু জানিয়েছে, স্কুলকে আর গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে না তারা।

সূত্র: জেরুজালেম পোস্ট।

এসএমডব্লিউ