রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে যেভাবে ভারতকে হারাল বাংলাদেশ
বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্পের কর্মীদের সিংহভাগই নারী/ ছবি ইকো বিজনেস
গত এক দশকে রপ্তানিতে প্রতিবেশি ভারতকে হারিয়ে সামনের দিকে ছুটছে বাংলাদেশ; ইকোনমিক সার্ভে-২০২১ রপ্তানিতে বাংলাদেশের এই এগিয়ে যাওয়ার কিছু কারণ ব্যাখ্যা করেছে। ইকোনমিক সার্ভে-২০২১ বলছে, ২০১১-২০১৯ সাল পর্যন্ত রপ্তানিতে বাংলাদেশের কম্পাউন্ড বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে, ভারতের রপ্তানির এই হার ছিল ০ দশমিক ৯ এবং বৈশ্বিক হার ছিল ০ দশমিক ৪ শতাংশ।
জরিপে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে যেসব পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক সুযোগ-সুবিধা আছে; বাংলাদেশ সেসব পণ্য রপ্তানি করে এই সাফল্য পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
২০১৭-১৯ সালের তথ্যের ভিত্তিতে জরিপে দেখা যায়, শেয়ার এবং মূল্যের ভিত্তিতে রপ্তানিকৃত শীর্ষ পাঁচটি পণ্যের মধ্যে চারটিতেই রিভিলড কমপারেটিভ অ্যাডভান্টেজ (আরসিএ) পেয়েছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, ভারতের শীর্ষ রপ্তানি পণ্যের তালিকায় সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া পণ্যগুলোর একটিও নেই।
ভারতের শীর্ষ আরসিএ রপ্তানি পণ্যগুলো মূলত শ্রম ঘন। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে, তুলা, কার্পেট এবং বিভিন্ন ধরনের টেক্সটাইল। কিন্তু ভারত যেসব পণ্য বেশি রপ্তানি করে সেগুলো মূলত মূলধন নির্ভর; আর এসব পণ্যের মধ্যে আছে পরিবহন সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি এবং মেকানিক্যাল পণ্য।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে, বাংলাদেশে শীর্ষ পাঁচ রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে টেক্সটাইল, তৈরি পোশাক ফুটওয়্যার এবং বিভিন্ন ধরনের পণ্য। ২০১৫ সালের পর বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৯০ শতাংশের বেশি আসে এসব পণ্য থেকে। এসব খাত মূলত উচ্চ শ্রম-ঘন, অদক্ষ এবং আধা-দক্ষ শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করে পরিচালিত হয়।
জরিপে বলা হয়েছে, ভারতের রপ্তানি খাত বাংলাদেশের তুলনায় ব্যাপক বিস্তৃত। দেশটির শীর্ষ পাঁচ রপ্তানি পণ্যের আয় মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ। তবে এসব পণ্য—পরিবহন সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি এবং মেকানিক্যাল পণ্যসামগ্রী মূলধন এবং প্রযুক্তিনির্ভর।
এর ফলে, বিশ্ব রপ্তানিতে ২০১১ সালে বাংলাদেশের অবদান ০ দশমিক ১ শতাংশ থাকলেও ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ০ দশমিক ৩ শতাংশে। ইকোনমিক সার্ভে বলছে, যেসব পণ্য প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে আছে, সেসব পণ্যের খাতকে বিশেষায়িত করে তুলতে বাংলাদেশের কাছ থেকে শেখার আছে ভারতের।
সূত্র: ব্লুমবার্গ।
এসএস